গোপালনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ টিনসেট চলছে পাঠদান

শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের ৩৩ বছরেও মেলেনি ফ্যাসিলিটিস ভবন

মুরাদ হোসেন (মাগুরা) থেকে : মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদর থেকে দুই বিলোমিটার উত্তরে গোপালনগর নিম্ন মাধ্যমি বিদ্যালয়টি অবস্থিত। ৩৩ বছর ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। তবে ৩৩ বছরেও মেলেনি ফ্যাসিলিটিস ভবন বা সরকারি কোন সহযোগিতা। তাই জরাজীর্ণ টিনসেট এবং সোহরাব হোসেন পাঠগারে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম চলছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টি হলেই টিনসেট ঘরে পানি পড়ে কাদা মাটিতে পরিনত হয়।
সাত গ্রামের প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে এই বিদ্যালয়ে। প্রতিষ্ঠান সুত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালের জানুয়ারীতে এলাকার কিছু গন্য মান্য বাক্তিবর্গের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়টি।
প্রতিষ্ঠাতারা একটি টিনসেট ঘর তৈরী করে শুরু করেন বিদ্যালয়ের পাঠদানের কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের বই পড়ার প্রতি উৎসাহ ও এলাকায় জ্ঞান বিস্তারের লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের পাশে গড়ে তোলা হয় সোহরাব হোসেন পাঠাগার। কিন্তু শিক্ষা বিস্তারে ৩৩ বছর পার হলেও বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়নে এখনো পর্যন্ত পায়নি সরকারি কোন সহযোগিতা বা ফ্যাসিলিটিস ভবন।
সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেনি পর্যন্ত প্রায় দেড়শ শিক্ষার্থী রয়েছে। আরো রয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার, সততা স্টোর ও শহিদ মিনার। বিদ্যালয়ের টিনসেট ঘরটি জরাজীর্ণ হওয়ায় পাশেই অবস্থিত সোহরাব হোসেন পাঠাগারকে ৩টি কক্ষ করে একটিতে শিক্ষক মিলনায়তন ও অফিস কক্ষ, বাকি দুটি কক্ষে চলছে পাঠদান। অপর ১টি শ্রেনির পাঠদান চলছে প্রতিষ্ঠালগ্নের জরাজীর্ণ সেই টিনসেট ঘরে যার জানালা নেই। চালার টিনে মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। জানা যায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতরে পানি পড়ে। কিন্তু স্কুলটিতে সব ধরণের জাতীয় দিবস পালনসহ জাতীয় প্রোগ্রামে উপজেলা পর্যায়ে অংশগ্রহন করে থাকে বিদ্যালয়টি।
৬ষ্ট শ্রেনির শিক্ষার্থী নুরজাহান, ফাহিম, জোসনা ও দিবাসহ কয়েকজনে বলে, গরমের সময় টিনসেট ঘরে ক্লাস করতে খুব কষ্ট হয়। বেশী সমস্যা হয় বৃষ্টির দিনে। সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতরে পানি পড়ে বই-খাতা ও ব্যাগ ভিজে যায়। এ ছাড়া ঝড়ের সময় আমাদের ভয়ে থাকতে হয়।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. খবিরুল ইসলাম জানান, গরম ও ঝড়-বৃষ্টির সময় আমাদের বেশী সমস্যা। ঘরের ভিতর পানি পড়ায় পাঠদানে ব্যহত হয়। ভয়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চায়না। যদি সরকারি ভাবে একটা ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা হতো তাহলে এলাকায় মানসম্মত শিক্ষাদানে গোপালনগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি আরো গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারবে বলে আমা বিশ্বাস।
প্রধান শিক্ষক রওশন আরা পারভীন বলেন, গোপালনগর, পোয়াইল, লাহুড়িয়া, সূর্য্যকুন্ডু, পাচুুড়য়া, রায়পুর ও আওনাড়াসহ কয়েক গ্রামের প্রায় দেড়শ ছেলে-মেয়ে এই বিদ্যালয়ের ৩টি শ্রেনিতে অধ্যয়নরত আছে।
এই বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে চলেছে। তবে গরম ও বৃষ্টির দিনে জরাজীর্ণ টিনসেট ঘরে পাঠদানে খুবই অসুবিধা হয়। সরকারিভাবে একটি ভবন নির্মাণ করা হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে বলে আশা করছি।