• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৩৫
সর্বশেষ :
নগরঘাটায় বিদ্যুতায়িত হয়ে এক কৃষক আহত সাংবাদিক আরাফাত আলীর বিরুদ্ধে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ শ্যামনগরে ঘর থেকে উচ্ছেদ করার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন  যশোরে প্রেমিকের হাতে প্রেমিকা খু ন, শেষ রক্ষা হলনা প্রেমিকের তালায় সাংবাদিকদের সাথে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবলুর রশিদের মতবিনিময় সমমনা সংগঠনের সাথে মিটিং পাটকেলঘাটায় গাঁজাসহ যুবক আটক ডুমুরিয়ায় ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্যোগে ফসল কর্তন ও মাঠ দিবস পালিত কালিগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের কর্মচারীর মা র পি টে সাংবাদিকসহ আ হ ত ৩ কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতিক বরাদ্ধ সম্পন্নঃ প্রচারণা শুরু 

জাহান্নাম থেকে মুক্তির আমল

প্রতিনিধি: / ৮ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪

ধর্মপাতা: আল্লাহতায়ালা জিন ও মানবজাতির জন্য তার কর্মের প্রতিদানস্বরূপ মৃত্যুর পর দুটি স্থান সৃষ্টি করে রেখেছেন। ১. নেককার বান্দা-বান্দিদের জন্য জান্নাত। ২. আল্লাহর নাফরমানদের জন্য জাহান্নাম। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘কিয়ামতের দিন আমি ন্যায়সঙ্গতভাবে মানদন্ড স্থাপন করব। ফলে কারও প্রতি কোনো জুলুম করা হবে না। যদি কোনো কর্ম তিল পরিমাণও হয়, তবে তাও আমি উপস্থিত করব। হিসাব গ্রহণের জন্য আমিই যথেষ্ট।’ (সুরা আম্বিয়া : ৪৭)। জাহান্নামের কথা শুনলেই মানব হৃদয়ে এক ভয়ংকর অনুভ‚তি জাগ্রত হয়। আফসোস হতে থাকে, এ জীবনে কতটুকু নেক আমল আছে। আমার এই আমল কি নাজাতের অসিলা হতে পারবে? এই আমলে কি জান্নাত মিলবে? ইত্যাদি ইত্যাদি। তৎক্ষণাৎ চিন্তা আসে আর নয় আল্লাহর নাফরমানি। হতে হবে সঠিক মুসলিম। এই ক্ষনিকের দুনিয়ায় জীবনকে পরিবর্তন করতে হবে। পরকালমুখী হতে হবে। জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তির নেক আমলগুলো করতেই হবে। জাহান্নামে কারা জ্বলবে, এ ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তবে তোমরা ভয় করো সেই আগুনকে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর। যা কাফেরদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত ২৪) অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘প্রকৃত ব্যাপার হলো, তারা কিয়ামতকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে, আর যে কেউ কেয়ামতকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে আমি তার জন্য প্রজ্বলিত আগুন তৈরি করে রেখেছি। তা যখন দূর থেকে তাদেরকে দেখবে, তখন তারা শুনতে পাবে তার ফোঁস-ফোঁসানি ও গর্জন ধ্বনি। যখন তাদেরকে ভালোভাবে তার কোনো সংকীর্ণ স্থানে নিক্ষেপ করা হবে, তখন তারা মৃত্যুকে ডাকবে। তখন তাদেরকে বলা হবে, আজ তোমরা মৃত্যুকে কেবল একবার ডেকো না; বরং মৃত্যুকে ডাকতে থাকো বারবার।’ (সুরা ফুরকান : ১১-১৪) উল্লেখ্য, জাহান্নামের শাস্তির কিছু নমুনা নি¤œরূপ।
১. সত্তর হাত লম্বা বেড়ি গলায় পরানো হবে। সুরা হাক্কাহ-এর ৩০-৩২ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে, ‘ধর ওকে এবং ওর গলায় বেড়ি পরিয়ে দাও। তারপর ওকে জাহান্নামে নিক্ষেপ কর। তারপর ওকে এমন শিকলে গেঁথে দাও, যার পরিমাণ হবে সত্তর হাত।’ ২. আগুনের লম্বা লম্বা খুঁটিতে শক্ত করে বেঁধে শাস্তি দেওয়া হবে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘সেদিন আল্লাহর সমান শাস্তিদাতা কেউ হবে না এবং তাঁর বাঁধার মতো বাঁধবারও কেউ থাকবে না।’ (সুরা ফাজর : ২৫-২৬)। ৩. উপুড় করে মাথা নিচে রেখে টেনেহিঁচড়ে জাহান্নামে নিয়ে যাওয়া হবে। ‘বস্তুত এসব অপরাধীরা বিভ্রান্তি ও বিকারগ্রস্ততায় পতিত রয়েছে। যেদিন তাদেরকে উপুড় করে (মুখের ওপর ভর) করে আগুনের দিকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হবে, (সেদিন তাদের চৈতন্য হবে এবং তাদের বলা হবে) জাহান্নামের স্পর্শ-স্বাদ ভোগ কর।’ (সুরা ক্বামার : ৪৭-৪৮)। ৪. লোহার হাতুড়ি দ্বারা আঘাত করা হবে। হাদিসে এসেছে, হজরত বারা ইবনে আযেব (রা.) রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন যে, ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (কাফির ব্যক্তি যখন কবরে মুনকার-নাকিরের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না তখন) আকাশ থেকে একজন আহŸানকারী বলেন, সে মিথ্যা বলেছে। তার জন্য জাহান্নামের বিছানা বিছিয়ে দাও এবং তাকে জাহান্নামের পোশাক পরিয়ে দাও। তারপর তার জন্য জাহান্নামের দিকে একটি দরজা খুলে দাও। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তখন তার দিকে জাহান্নামের গরম হাওয়া আসতে থাকে। কবরকে তার জন্য এত সংকীর্ণ করে দেওয়া হয়, যাতে তার এক দিকের পাঁজর অন্যদিকের পাঁজরের মধ্যে ঢুকে যায়। অতঃপর তার জন্য একজন অন্ধ ও বধির ফেরেশতাকে নিযুক্ত করা হয়, যার সঙ্গে একটি লোহার হাতুড়ি থাকে। যদি এই হাতুড়ি দ্বারা কোনো পাহাড়কে আঘাত করা হয়, তাহলে সেটি সঙ্গে সঙ্গে ধূলিকণায় পরিণত হয়ে যাবে। সেই ফেরেশতা এ হাতুড়ি দ্বারা তাকে আঘাত করেন, আর সে ওই আঘাতের চোটে এত বিকট চিৎকার করে যে, মানুষ ও জিন ব্যতীত পৃথিবীর সব কিছুই শুনতে পায়। সঙ্গে সঙ্গে সে মাটির সঙ্গে মিশে যায়। তারপর আবার তার দেহে আত্মা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে তার শাস্তি চলতে থাকে (কেয়ামত পর্যন্ত)।’ (আবু দাউদ : ৪৭৫৩) ৫. এ ছাড়াও আগুন দিয়ে মুখ ঝলসে দেওয়া, প্রচ পিপাসার সময় পচা-গলা পুঁজ পিপাসা নিবারণের জন্য দেওয়া, বড় বড় বিষাক্ত সাপ-বিচ্ছুর দংশনসহ কঠিন কঠিন শাস্তি জাহান্নামে দেওয়া হবে। একটু চিন্তা করি। দুনিয়ার জিন্দেগি খুবই সামান্য। সময় তার নিজ গতিতে চলে যায়। এটাই নিয়ম। তাই এখন রমজানের শেষ দশক তথা নাজাতের দশক চলছে। এ সময়ে আল্লাহতায়ালা বহু জাহান্নামীকে জাহান্নাম থেকে মুক্তিদান করেন। রমজানে দোয়া কবুলের সময়। অধিক হারে দোয়া করি। এখনই সময় পরিপূর্ণ তওবা করে খাঁটি মুমিন হওয়ার। আল্লাহপাকের কাছে এই কামনা করা যে, হে আল্লাহ আমাদেরকে জাহান্নামের ভয়াবহ অবস্থা থেকে মুক্তিদান করুন এবং আপনার সন্তুষ্টি দ্বারা আমাদেরকে কামিয়াব করুন। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে বেশি বেশি নেক আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com