বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ফাইল প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনমন্ত্রী আমাদের ফাইলটি ফেরত পাঠিয়েছেন। কোনো আইনি জটিলতা নেই। এখন আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফাইলটি পাঠাব। তিনি সম্মতি দিলে আমরা একটি জিও করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব। সবকিছুর প্রসেস চলছে। তাহলে কি সাজা ছয় মাসই মওকুফ থাকছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেভাবে আমরা দিয়ে এসেছি আগে, সেভাবেই চলবে। অনেক কুখ্যাত অপরাধী রয়েছেন যারা দেশের বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছেন বা মুক্তি পেয়ে তারা উন্মুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন। খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি কেন নয়, এক সাংবাদিক এ প্রশ্ন করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঘটনা হলো খালেদা জিয়ার মামলা ছিল, মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তার নামে আরও কিছু মামলা আছে। তিনি বলেন, কোর্ট থেকে যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে সিদ্ধান্তের বাইরে কোন কিছু আমরা করিনি। কোর্টের সিদ্ধান্তের পরই আমাদের প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতাবলে তাকে বাসায় থেকে সুচিকিৎসা নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন সাজা স্থগিত করে। এই হলো বর্তমান অবস্থা। আমাদের দেশে যারা আদালত থেকে অপরাধের জন্য দন্ডপ্রাপ্ত হন, তারা যে নিয়মে চলেন, সে অনুযায়ী চলছে, এর ব্যত্যয় ঘটেনি। খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার ৬ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। আবেদনে তাকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার অনুমতি চাওয়া হয়। পরে সে আবেদনের বিষয়ে মতামত নিতে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সবশেষ গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে খালেদা জিয়ার দন্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়েছিল। সেই মেয়াদ আগামী ২৪ মার্চ শেষ হবে। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা শেষে গত ১৪ মার্চ গুলশানের বাসায় ফেরেন খালেদা জিয়া। এর আগে ১৩ মার্চ রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতা বাড়লে মাঝে মাঝে তাকে হাসপাতালে নিতে হচ্ছে।
শিশুদেরও মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: শিশু মাদকাসক্তসহ সব মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, আমরা চাই এই সামাজিক আন্দোলনটা গড়ে তুলতে। এটি না পারলে জায়গাটিতে আমরা বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি। মতিঝিলে গেলে এখন বাচ্চা-বাচ্চা শিশুরাও মাদকাসক্ত হতে দেখা যাচ্ছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন ধূমপান বিরোধী আন্দোলন করেছিলাম মাত্র ১ দিনে ধূমপান বন্ধ করতে পারিনি। আমরা আইন করেছি ধূমপানের জন্য, আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানাও করেছি কিছুদিন। আমরা করতে (বন্ধ) পারিনি। কিন্তু আমরা যখন সামাজিক আন্দোলন করেছি, মিডিয়ায়, স্কুল-কলেজে, হাট-বাজারে, মসজিদ-মাদরাসায়- আমরা যখন বলতে সক্ষম হয়েছি, ধূমপান আসলে বিষ পান, যে-ই ধূমপানে যাচ্ছেন তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন- আমরা এটা বুঝাতে পারাতে সক্ষম হয়েছি। প্রকাশ্যে ধূমপান কিন্তু কমে গিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা চাই এই সামাজিক আন্দোলনটা গড়ে তুলতে। এটি না পারলে এই জায়গাটিতে আমরা বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি। আর মাদকের যে সমস্ত হাব, যেমন- ইয়াবা, এলএসডি, হেরোইন; এগুলো যে কতখানি ক্ষতিকর, কতখানি যন্ত্রণাদায়ক…ক্যারি করতে কোনো কিছুরই প্রয়োজন হয় না। আঙ্গুলের ফাঁকেই নিয়ে আসা যায়। কাজেই এগুলোকে ধরা, চেক করা এবং আইডেন্টিফাই করা একটা মুশকিলের বিষয় হয়ে গেছে। তবে আমরা বসে নেই। আমরা সীমান্তে কুকুর রাখছি। বিমানবন্দরে ড্রাগ কিংবা বিস্ফোরক দ্রব্য (ধরতে) কুকুর এপ্লাই করছি। আমাদের যা কিছু আছে সবই অ্যাপ্লাই করছি, যাতে করে সাপ্লাই রাস্তা কমে যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা যদি চাহিদা কমাতে না পারি তাহলে এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো না। সেজন্য আপনাদের কাছে আহবান থাকবে আপনারাও প্রচার করুন মিডিয়ার মাধ্যমে এটার ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরুন।
https://www.kaabait.com