স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, চাঁদাবাজির চাইতে অধিকতর মুনাফার চিন্তাভাবনার কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঢাকায় বাড়ে। তবে চাঁদাবাজি রোধে পুলিশের স্পেশাল ড্রাইভ চলছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ পুলিশ স্টাফ কলেজে ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন সাইবার সিকিউরিটি’ কোর্স উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, চাঁদাবাজি রোধে পুলিশ-র্যাব কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কারওয়ান বাজারে যে জিনিস ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সেটাই অল্প কিছু দূর নিয়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চাঁদাবাজির চাইতে বেশি প্রভাব পড়ে এই ক্ষেত্রে অর্থাৎ অধিকতর মুনাফার চিন্তাভাবনা করা। যশোর থেকে ঢাকায় একটি ট্রাকের কত টাকা চাঁদাবাজি দেওয়া লাগে, সেই হিসাবে আমরা পরিসংখ্যান করেছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চাঁদাবাজি বন্ধে ঢাকা-চট্রগ্রাম হাইওয়েতে ইতোমধ্যে ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। ভবিষ্যতে সব মহাসড়কে ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। নিত্যপণ্যে যারা অতি মুনাফা করে দাম বৃদ্ধি করছে তাদের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবস্থা নেবেন, জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও ভোক্তা অধিকারসহ বিভিন্ন ফোর্স এখানে কাজ করছে। যখনই নজরে আসে তখনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে। তিনি বলেন, যারা অধিক মুনফা করছে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে পাড়ায়-মহল্লায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি শুরু হলে অধিক মুনাফা রোধ করা সম্ভব হবে। এদিকে স¤প্রতি দেশজুড়ে একের পর এক অগ্নিকাÐ ঘটছে। বিশেষ করে রাজধানীর বেইলি রোডের কোজি গ্রিন কটেজ ও ডেমরার কাপড়ের গোডাউনে আগুন লাগার ঘটনা ভয়াবহতাকেও হার মানিয়েছে। এসব ঘটনা সামনে এনে দেশে ঘন ঘন আগুন লাগার কারণ জানতে চাইলে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, কয়েক মাসের মধ্যে দেখেছি বড় বড় দু-চারটা অগ্নিকাÐ হয়েছে। সেখানে জানমালের ক্ষতি হয়েছে। রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাÐের ঘটনায় অনুসন্ধান চলছে। এ সময় রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, সিলিন্ডার কিংবা গ্যাস সংযোগ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন থাকা দরকার। ফায়ার সার্ভিসের নির্দেশনা অনুযায়ী অগ্নিকাÐ রোধে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সংযোজন করলে ঘন ঘন অগ্নিকাÐ থেকে বাঁচতে পারব। এরপর মন্ত্রী বলেন, রাজধানীর পুরান ঢাকায় কেমিকেল গোডাউন সরিয়ে দেওয়ার জন্য জায়গা দিয়েছিলাম। তারপরেও তারা গোপনে আবারও চলে আসে। আইন ভঙ্গ করে, কোনো অনুমোদন না নিয়ে এসব করছে তারা। এসব অগ্নিকাÐ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এর আগে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন সাইবার সিকিউরিটি কোর্সের প্রথম ব্যাচের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় দক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশিত স্মার্ট পুলিশ গড়ে তুলতে পুলিশ স্টাফ কলেজের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন সাইবার সিকিউরিটি কোর্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে। মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রসার ও বিকাশ ঘটছে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তি নির্ভর পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলা এখন সময়ে দাবি। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, এ কোর্স সম্পন্নকারী পুলিশ কর্মকর্তারা সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, প্রযুক্তির দ্রæত প্রসারের ফলে অপরাধের ধরন ও প্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। সাইবার অপরাধ মোকাবিলা এখন বিশ্বব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ সাইবার অপরাধ ঠেকাতে সক্ষমতা অর্জনে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এক্ষেত্রে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন সাইবার সিকিউরিটি কোর্স একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। কোর্সটি পুলিশ কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়াবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। দশ মাস মেয়াদি এ প্রশিক্ষণ কোর্সে বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করছেন। পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর (অতিরিক্ত আইজিপি) ড. মল্লিক ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান প্রমুখ।
https://www.kaabait.com