স্পোর্টস: খেলা শুরুর আগেই গ্যালারি বলতে গেলে কানায় কানায় পূর্ণ। তবু লোকের জোয়ার থামে না। সব গ্যালারিতেই গায়ে গা ঘেঁষে ঠেসে দাঁড়িয়ে অনেক দর্শক। ২৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামে দর্শক ছাড়িয়ে গেল হয়তো ৩০ হাজার। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের গোটা গ্যালারি রূপ নিল লাল সমুদ্রে। দুই দলেরই জার্সিই লালচে। দূর থেকে তাই বোঝা কঠিন, কোন দলের সমর্থকদের পাল্লা ভারি। তবে খেলা যতই এগোতে থাকল, সমর্থনের প্রতিযোগিতায় জয়ী দলও স্পষ্ট হয়ে গেল। চিৎকার, গর্জন আর উল্লাসে-উচ্ছাসে ফরচুন বরিশালের সমর্থকেরা বুঝিয়ে দিলেন, লাল সমুদ্রে তাদের জোয়ারই বেশি তীব্র। ফাইনালের আরেক দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স বিপিএলের সফলতম দল। সমর্থনের দিক থেকেও তাদের শীর্ষ পর্যায়েই রাখতে হয়। তবে এবারের আসরে বরিশালের সমর্থকেরা জানান দিয়েছেন তাদের বিশালত্ব। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়াম, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, সব জায়গায় ছিল তাদের রাজত্ব। মাঠের ভেতরেই শুধু নয়, মাঠের বাইরেও মিছিলে মাতিয়ে রেখেছেন বরিশালের সমর্থকেরা। সমর্থনের সেই জোয়ার দেখে মুগ্ধ তামিমও। বিপিএলে এবারই প্রথম বরিশালের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেললেন তামিম। বরিশালের প্রথম বিপিএল ট্রফিও এলো তার হাত ধরেই। ব্যাটে আর নেতৃত্বে ট্রফি জয়ের এই অভিযানে দলের সমর্থন দেখে আগের ধারণাই বদলে গেছে বরিশাল অধিনায়কের। দর্শকদের প্রসঙ্গ উঠতেই প্রশ্ন থামিয়ে ভালো লাগার কথা জানিয়ে দিলেন তিনি। “হ্যাঁ হ্যাঁ, এটা ঠিক আমি মুগ্ধ, বরিশালের সে পরিমাণ সমর্থক আছে! এটা অবিশ্বাস্য। আমি এরকম (আর দেখিনি)।” “আমি কুমিল্লায় খেলেছি, যারা দারুণ এক ফ্র্যাঞ্চাইজি ও দুর্দান্ত একটি দল। সবসময়ই ভেবেছি, কুমিল্লার সমর্থন সবচেয়ে বেশি। কিন্তু আমার মনে হয়, এবছর বরিশাল তা ছাড়িয়ে গেছে বিশাল ব্যবধানে।” বর্তমান মালিকানায় ফরচুন বরিশাল নাম নিয়ে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির তৃতীয় বিপিএল ছিল এটি। ২০২২ আসরের ফাইনালে কুমিল্লার কাছে হেরে যায় ১ রানে। গতবার বাদ পড়ে যায় এলিমিনেটরে হেরে। প্রথম বিপিএলে তখনকার ফ্র্যাঞ্চাইজি বরিশাল বার্নার্স ও ২০১৫ আসরে সেই সময়ের ফ্র্যাঞ্চাইজি বরিশাল বুলসও হেরেছিল ফাইনালে। এবার অবশেষে ধরা দিল বহু কাঙ্ক্ষিত শিরোপা। দলের সত্বাধিকারী মিজানুর রহমানও এই সাফল্যের পেছনে বড় কৃতিত্ব দিলেন দর্শকদের সমর্থনের জোয়ারকে। “সবচেয়ে বড় ধন্যবাদ জানাচ্ছি দর্শকদের। তারা আমাদেরকে এভাবে সমর্থন না করলে আমরা এতটা ভালো খেলতে পারতাম না। অনেক সময়ই দেখেছেনৃ একটা চার হলে মনে হচ্ছে যেন পুরো গ্যালারিই বরিশাল। ৯০ শতাংশই মনে হচ্ছে বরিশাল।” “সমর্থকদের কাছে আমরা তাই কৃতজ্ঞ। পুরো বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী মানুষ, যারা আমাদেরকে সমর্থন করেছেন চট্টগ্রাম, সিলেট, সব জায়গায় আমরা সমর্থন পেয়েছি। এজন্য আমরা গর্বিত।”
https://www.kaabait.com