ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা বুয়েটে জঙ্গিবাদ, অপরাজনীতির বিস্তার ঘটছে কিনা, সেই প্রশ্ন তুলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, “সেই রকম হলে সরকারকে অ্যাকশনে যেতে হবে। আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা সকল অপকর্ম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। সেই নীতিতে আমরা এগিয়ে চলছি। “বুয়েটে আবরার হত্যাকান্ডে আমরা ছাড় দিইনি। আজকে আমি রাজনীতি করি, সেখানে বুয়েটে যেতে পারব না? এটা কোন ধরনের আইন? এটা কোন ধরনের নীতি?” রোববার তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এ কথা বলেন কাদের। ২০১৯ সালে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার পর আন্দোলনের মুখে ওই ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, দপ্তর সম্পাদকসহ অনেকে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে এর প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে ফের আন্দোলন শুরু হয়। ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-মিছিল এবং সংবাদ সম্মেলনে করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির মুখে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করা হয়। তবে ইমতিয়াজসহ আরো পাঁচ শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার পর বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফেরাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে গতকাল রোববার প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ছাত্রলীগ। বুয়েটে ‘নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি’ ফেরানোর দাবি জানাচ্ছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত শনিবার শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও বুয়েটে জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা চলছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর মত তিনিও বিষয়টি খতিয়ে দেখার তাগিদ দেন। বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের গতকাল রোববার বলেছেন, “মঈন খানের মত নেতারা আজকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলে। বিএনপি নেতাদের কেউ বলে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার, আবার কেউ বলে ভারতের পণ্য বর্জন। “বিএনপির সব ইস্যু নির্বাচনে মার খেয়েছে। এখন তাদের নতুন ইস্যু ভারতবিরোধী। বিএনপি মিথ্যাচার করছে। বিএনপি যখন ক্ষমতা ছেড়ে যায়, তখন বাংলাদেশের রির্জাভ ছিল সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার। এখন তারা আমাদের রির্জাভ নিয়ে কটাক্ষ করে। এখন আমাদের রির্জাভ ২১ বিলিয়ন ডলারের ওপরে।” বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, “স্বাধীনতা ঘোষণার পাঠক ঘোষক হতে পারে না। পাঠক তো ঘোষক না। তার চেয়ে বড় কথা ঘোষণার অধিকার কার ছিল? ৭০ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু জনগণের মেন্ডেট পেয়েছিলেন।” উপজেলা নির্বাচন নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, “নেত্রীর নির্দেশনা আপনারা জানেন। আপনাদের প্রস্তাব ছিল কোনো প্রার্থী না দেওয়ার। আপনাদের খুব দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। একেক জনের একেক রকম কথাবার্তা দলকে বিভ্রান্ত করে। যা খুশি বলে দেবেন? ফ্রি স্টাইলে কথা বললে আমরা ব্যবস্থা নেব। “আজকে আওয়ামী লীগের নেতারা চায়ের দোকানে বসে দলের বিরুদ্ধে কথা বলে। এই ধরনের নেতাদের পরিহার করতে হবে। উপজেলা নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার ভোট হবে, জনগণ যাকে ভোট দেওয়ার দেবে। এখানে আপনারা ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না।” আওয়ামী লীগের চাদঁপুর জেলা কমিটি ও চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সম্মেলনের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়ে কাদের বলেন, “আমরা সম্মেলন করে কমিটি করতে চাই। কেউ ক্ষমতার দাপট দেখাবেন না।” আওয়ামী লীগের সদস্য মোশাররফ হোসেন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সেলিম মাহমুদ মতবিনিময় সভায় উপস্তিত ছিলেন।
https://www.kaabait.com