বিদেশ : মিয়ানমারে ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসা বর্তমান জান্তা সরকার দেশটিতে সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে। দেশের সব প্রাপ্তবয়স্কদের এখন থেকে অবশ্যই সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে দুই বছর সামরিক কমান্ডের অধীনে থাকতে হবে। এমন একটি সময় এই ঘোষণা এলো যখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে দেশটির সামরিক বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে। খবর বিবিসির। শনিবার জান্তা সরকার এক ঘোষণায় জানায়, দেশের সব ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী পুরুষ এবং ১৮ থেকে ২৭ বছর বয়সী নারীদের বাধ্যতামূলকভাবে দুই বছর সামরিক বাহিনীতে সময় দিতে হবে। এ বিষয়ে অবশ্য বিস্তারিতভাবে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি দেশটির সরকার। তবে, বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় খুব শিগগিরই নিয়োগের আইনকানুন, নিয়ম, নির্দেশনাসহ আদেশের বিষয়ে বিস্তারিত ঘোষণা দেবে। সা¤প্রতিক সময়ে দেশটির সেনাবাহিনী বিদ্রোহীদের প্রচÐ প্রতিরোধ ও আক্রমণের শিকার হচ্ছে। গত বছরের শেষভাগে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জাতিগত বিদ্রোহীরা অন্যান্য সশস্ত্র যোদ্ধাদের সহায়তায় শান রাজ্যের সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে নেয়। এই এলাকাটি দিয়ে চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের অধিকাংশ বাণিজ্যিক কর্মকাÐ চলত। গত মাসে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সদস্যরা চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় সেনাবাহিনীর কাছ থেকে। এমন এক মুহূর্তে সেনাবাহিনীতে যোগাদানের এমন ঘোষণা এলো। ২০১০ সালে মিয়ানমারে সেনাবাহিনীতে নিয়োগের বিষয়ে প্রথম আইন জারি হয়। তবে, এটি প্রয়োগ হয়নি বহুদিন। আইন অনুসারে, জরুরি অবস্থায় সেনাবাহিনীতে নিয়োগের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। কেউ যদি যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায় তবে তাকে সমান সময় জেল খাটতে হবে। ২০২১ সালে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয় এবং স¤প্রতি এর মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। ২০২১ সালের ১ ফেব্রæয়ারি সেনাবাহিনী ঘোষণা দেয় যে এখন থেকে দেশের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতেই থাকবে। ২০১১ সালে গণতন্ত্রে ফেরার আন্দোলনের আগে প্রায় ৫০ বছর মিয়ানমার সামরিক জান্তার শাসনাধীন ছিল। তবে, ২০২১ সালের পর থেকেই সেখানে শুরু হয় বিদ্রোহ আর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। তখন থেকে সংঘাতে দেশটিতে মারা গেছে হাজারও মানুষ আর বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১০ লাখেরও বেশি নাগরিক।
https://www.kaabait.com