রেলপথ মন্ত্রী জিল্লুর হাকিম বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য রেলওয়েতেও স্মার্ট ও দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন। অতি শিগগিরই শূন্যপদ পূরণ করে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রী বলেন, রেলের অনেক জমি বেহাত হয়ে গেছে। এ কাজে জড়িত রয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসব জমি দখলমুক্ত করে রেলওয়ে কারখানার আধুনিকায়নে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছেন। শনিবার বেলা ১১টার সময় দেশের বৃহত্তম নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী। রেলপথ মন্ত্রী বলেন, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় জনবল দিনদিন কমে আসছে। ২৮৫৯ জনবলের বিপরীতে বর্তমানে ৮৬০ জন কর্মরত রয়েছেন। রেলওয়ে সেতু কারখানায় অতীতে রেলসেতুর গার্ডার তৈরি হতো। কারখানাটি আবার সচল করা হবে। আমরা অত্যন্ত আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি রেলওয়ের সমস্যাগুলো দ্রæত সমাধানের জন্য। মন্ত্রী বলেন, বিশ্বে রেলওয়ে অনেক এগিয়েছে। আমাদেরও সেই তালে তাল রেখে এগিয়ে যেতে হবে। নতুন নতুন রেলপথ স্থাপন ও সেবার মান বৃদ্ধি করে রেলওয়ে যাত্রীবান্ধব করতে হবে। পরে কারখানার ২৯টি শপ (উপ-কারখানা) ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন মন্ত্রী। বর্তমান সরকারের রেলপথ মন্ত্রী হিসেবে এটিই প্রথম রেলওয়ে কারখানা পরিদর্শন। তিনি রেলওয়ে কারখানায় এসে পৌঁছলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান, কারখানার বিভাগীয় তত্ত¡াবধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান। এরপর মন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে কারখানায় স্থাপিত অদম্য স্বাধীনতায় শহীদদের স্মরণে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক। এছাড়াও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, মহাপরিচালক (ডিজি) কামরুল হাসান, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার, প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (সিএমই, পশ্চিম) মুহম্মদ কুদরত-ই খুদা, জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ, পুলিশ সুপার গোলাম সবুর, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও শ্রমিকলীগ নেতা মোখছেদুল মোমিন প্রমুখ।
এদিকে গতকাল শনিবার দুপুরে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার পার্বতীপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানা পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী। এসময় তিনি বলেন, নানা অব্যবস্থাপনার কারণে রেলওয়েতে লোকসান হচ্ছে। রেলমন্ত্রী বলেন, টিকিট কালোবাজারির ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। রেললাইন স¤প্রসারণ ও প্রতিটি জেলায় পৌঁছানোর কথাও জানান তিনি। রেলমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটাকে লাভজনক করতে হলে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। এই সিদ্ধান্তগুলো আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নেবো। তিনি আরও বলেন, টিকিট কালোবাজারির ব্যাপারে ইতোমধ্যে দুটি চক্রকে ধরা হয়েছে। ঈদের আগে টিকিট কালোবাজারি যেন না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর সঙ্গে অনেক সরকারি সংস্থাকে জড়িত করা হয়েছে যাতে করে টিকিট কালোবাজারি না হয়। সহজকেও এ ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। যদি কেউ জড়িত থাকে তাহলে তাকে আইনের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।বিরল থেকে ভারতের রাধিকাপুর পর্যন্ত রেলওয়ে সংযোগ স্থাপন করে স্থলবন্দর চালুর ব্যাপারে জিল্লুল হাকিম বলেন, এগুলোর সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় জড়িত রয়েছে। আমাদের রেলওয়ের বগি দরকার, ইঞ্জিন দরকার, চালক দরকার, স্টেশনমাস্টার দরকার, বিভিন্ন টেকনিক্যাল লোকজন জড়িত। এগুলোর ব্যবস্থা করতে পারলে আমাদের সিদ্ধান্ত রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রেললাইন স¤প্রসারিত করতে হবে। প্রতিটি জেলায় রেললাইন পৌঁছাতে হবে। কারণ, এটা এখন সস্তা। এটা যাত্রীদের জন্য এবং মালামাল পরিবহনের জন্যও। আমরা চেষ্টা করছি, সস্তায় পরিবহনব্যবস্থা চালু করার। তিনি বলেন, এই কারখানার ব্যাপারে সম্পূর্ণভাবে আলোচনা করে সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। এখানে জনবল সংকট রয়েছে। এটি দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। চলতি বছরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ সময় দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদসহ রেলওয়ে মন্ত্রণালয় ও লোকোমোটিভ কারখানার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
https://www.kaabait.com