বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন এর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার ১৩ মে সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানায় প্রেস ব্রিফিং প্রদান করেন। তিনি বলেন,গত ৯ মে ২০২৫ তারিখ রাতের অন্ধকার ভারতীয় সীমান্তবর্তী বিএসএফ কর্তৃক ৭৫ জন বাংলাদেশের মুসলমান নগরিক ও ৩ জন ভারতীয় মুসলমান নাগরিক সুন্দরবনের গহীনে মান্দার বাড়িয়ার চরে পুশইন করে। পরবর্তীতে উক্ত ৭৮জন মান্দারবাড়ীয়া বন টহল ফাড়িতে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যেয়ে তাদেরকে প্রথম উদ্ধার করি। তাদের চিকিৎসা সেবা সহ খাদ্য সামগ্রী প্রদান করি। এরমধ্যে দশ জনের অবস্থা গুরুতর হয় তাদেরকে মোংলাতে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রদান করি। তারা হাসপাতাল এখনো চিকিৎসাধীন। তাদের ভাষ্য মতে তারা দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন পেশায় বসবাস করে আসছে ভারতের গুজরাটে।
গত ২৬ এপ্রিল ভোররাতে ভারতীয় পুলিশ অভিযান দিয়ে বুলড্রেজার দিয়ে তাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়, এবং তাদের পরিবারের সামনে অমানুষিক অত্যাচার ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়, এবং ধর্মীয় অমানুষিক নির্যাতন করে। তারা আরো তাদের উপর যে অমানুষের নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের পরিবারের উপরও নির্যাতন করা হচ্ছে। তাদের চোখ বেঁধে সামরিক বিমানে করে বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয়। পরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে তাদের সন্দেশখালি থানা থাকে কারগো যোগে বাংলাদেশ সীমানায় মান্দার বাড়িয়া চরে রেখে যাওয়া হয়। গত ১১ মে ৭৮ জনকে শ্যামনগর থানায় হস্তান্তর করে।
শ্যামনগর থানায় বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও প্রশাসনের সকল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তাদেরকে আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয় ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির,ও কোস্টগার্ড ও শ্যামনগর থানার পুলিশ সদস্যগণ। ৩ জন ভারতীয় নাগরিককে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে তারা হলো- হলেন, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার ফুলবাড়িয়া গ্রামের খালিদ শেখের ছেলে আব্দুর রহমান (২০), নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মুন্না শাহ এর ছেলে হাসান শাহ (২০) ও একই গ্রামের সোহেল শেখ এর ছেলে সাইফুল শেখ (১৯)। এদের বাবা-মা বাংলাদেশী হলেও তাদের জন্ম ভারতের গুজরাট প্রদেশের আহমেদাবাদ জেলায়। সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম জানান, উদ্ধার হওয়া ৭৮ জনের মধ্যে আব্দুর রহমান, মো. হাসান শাহ ও সাইফুল শেখ তিনজন জন্মসূত্রে ভারতীয় নাগরিক দাবি করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। এবিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন জানান, বিএসএফ ও ভারতীয় কোস্টগার্ড গত ৯ মে ৭৮ বাংলাভাষী নাগরিককে চোখ বেঁধে বঙ্গপোসাগরের তীরবর্তী মান্দারবাড়িয়া এলাকা একটি চরে ছেড়ে দিয়ে যায়। সেখান থেকে উদ্ধারের পর রাতে কোস্টগার্ডের কাছ থেকে আমরা শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ তাদেরকে রিসিভ করি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১২ মে সোমবার সকালে তাদেরকে আত্মীয় স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু কাগজপত্র সঠিকভাবে প্রস্তুত না হওয়ায় তাদেরকে সোমবার হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। রাতে পুলিশ ও আমরা উপজেলা প্রশাসন মিলে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়ার পাশপাশি থাকার ও খাওয়ার ব্যবস্থা করি।
তিনি আরো বলেন, ৭৮ জনের মধ্যে ৭৫ জন জন্মসূত্রে বাংলাদেশী নাগরিক হওয়ায় মঙ্গলবার তাদেরকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি তিন জনের ভারতীয় নাগরিকত্ব আছে কিন্তু বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। তিন জন ভারতীয় হিসাবে তাদের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। তাদের সঠিক কাগজপত্র আছে কিনা সে বিষয়ে তদন্ত করে পুলিশ ব্যবস্থা নিবে। তবে ওই তিনজনই পৈত্রিক সূত্রে বাংলাদেশী বলে জানান তিনি।
" বিবিসি সাতক্ষীরা "
সম্পাদক ও প্রকাশক : আব্দুল মতিন।
মেইল- bbcsatkhira@gmail.com ঠিকানা- পাটকেলঘাটা, সাতক্ষীরা, বাংলাদেশ।
zahidit.com