বাঙালির রসনা বিলাসের অন্যমত মাধ্যম পেঁয়াজ। তরকারিতে পেঁয়াজ মসলা অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। সকাল বেলার নাস্তা থেকে শুরু করে দিনের মধ্যাহ্ন ভাগ আর রাতের যবনিকাপাত আহারে পেঁয়াজ অতি আবশ্যক একটি অনুষঙ্গ। তরকারিতে পেঁয়াজের নির্যাস না থাকলে আর যা-ই হোক সে-ই তরকারি বাঙালির রুচির বিড়ম্বনার কারনও বটে।
গ্রাম-বাংলার কৃষক ক্ষেতের আইলে বসে বউয়ের হাতের কাঁচা মরিচ-পিঁয়াজ দিয়ে নিয়ে আসা সকালের পান্তাভাত কর্দমাক্ত শরীরে খেয়ে নেয় অবলীলায়। আবার সকাল বেলা পান্তা ভাতের সাথে কাঁচা পেঁয়াজ আর মরিচ এখনও অনেকের অমৃতসম আহার্য। তাছাড়া আধুনিক আড্ডাপ্রিয় মানুষের টেবিলে কাঁচা পেঁয়াজ আর মুড়ি মাখা একটি বর্ণাঢ্য আয়োজন। আর তাই ভারতীয় উপমহাদেশে বাঙালির খাদ্যের রুচি এক দারুণ উপাখ্যান।
মাগুরার মহম্মদপুর সদরে পেঁয়াজের একটি জমজমাট হাট রয়েছে, যা সপ্তাহে প্রতি শনি-মঙ্গলবার বসে। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসে কৃষক এবং ফড়িয়ারা। সকাল আটটা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত কেনা-বেচা হয়। এই হাটের পেঁয়াজ ঢাকা, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রির জন্য যায়। অতিসাম্প্রতি দেশের পেঁয়াজ বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা বিরাজ করছে। প্রতিদিনই বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে চলেছে। গত এক সপ্তা আগে এই বাজারে প্রকার ভেদে দেশি পেঁয়াজ কেজি দরে ৮০-৯০টাকা বিক্রি হয়েছে। এক মাস আগে যেখানে ৬০-৭০ টাকা দরে এই বাজারে পেঁয়াজ পাওয়া যেত। কিন্ত সপ্তাহের ব্যবধানে এখানে কেজিপ্রতি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বছরের শেষদিকে এসে পেঁয়াজের দামের ঘোড়া লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এর জন্য অতিমুনাফা লোভীদের দায় ও থাকতে পারে! যার কারণে সরকার পেঁয়াজ আমদানির হুমকি দিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) মহম্মদপুর পেঁয়াজের হাট ঘুরে দেখা যায়, গত এক মাস আগের তুলনায় এখানে পেঁয়াজ কিছুটা কম পাওয়া যাচ্ছে। হাটে পেঁয়াজ বিক্রেতা কৃষক আব্দুল হালিম জানান, এখন বাজারে পেঁয়াজের যে দাম তাতে আমরা অনেক খুশি। কিন্তু আসল কথা হল আমাদের ঘরে বিক্রির জন্য আর কোন পেঁয়াজ নেই। সিজনের শুরুতে অল্প দামে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। যখন দাম বাড়ল তখন এই দাম কৃষকরা পেলো না।
পেঁয়াজ ক্রেতা মজনু বিশ্বাস জানান, আমি প্রতি হাটে কিনি। এবং মহম্মদপুর বাজারে সেই পেঁয়াজ বিক্রি করি প্রান্তিক প্রর্যায়ে। গত এক মাস আগে আমরা খুচরা বাজারে ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করে পাঁচ টাকা দশ টাকা লাভ করতাম। এখন ১০০ থেকে১১০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করে একই পরিমাণ লাভ করতে হচ্ছে। অথচ আগের থেকে এখন কেজি প্রতি বেশি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে।
অন্যদিকে দিনমুজুর আব্দুস সালাম জানান, প্রতি হাটে আমাদের পেঁয়াজ কিনতে হয়। পেঁয়াজ ছাড়া তারকারি খেতে পারি না। আমাদের শ্রমের দাম বাড়ে না, অথচ বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। যেটা আমাদের মতো দিনমজুর শ্রমিকদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক।
" বিবিসি সাতক্ষীরা "
সম্পাদক ও প্রকাশক : আব্দুল মতিন।
মেইল- bbcsatkhira@gmail.com ঠিকানা- পাটকেলঘাটা, সাতক্ষীরা, বাংলাদেশ।
""বি:দ্র: এই সাইটের কোন লেখা বা ছবি কপি করা আইনত দন্ডণীয়""
zahidit.com