ডুমুরিয়ার চটচটিয়া সেতু নির্মাণে ২০ গ্রামের মানুষের স্বপ্ন পূরণ

শেখ মাহতাব হোসেন ডুমুরিয়া খুলনা: খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার অবহেলিত ১৪নং মাগুরখালী ইউনিয়নের ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে যোগাযোগ থেকে শুরু করে পানি পরিশোধন ও সরবরাহ প্রকল্প স্থাপন, মন্দির-মসজিদ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎসহ প্রায় সব খাতে উন্নয়ন হচ্ছে।

 

 

নির্মাণাধীন চটচটিয়া সেতু ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছেন অবহেলিত মাগুরখালী ইউনিয়ন বাসী আগামী ফেব্রুয়ারী নাগাদ সেতুটি চালুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা পোষণ করছেন সবাই। এটি চালু হলে মানুষ খুব সহজেই পাইকগাছা হয়ে খুলনা ও সাতক্ষীরা শহরে পৌঁছাতে পারবে। এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। সরজমিনে গিয়ে তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত ইউনিয়ন ছিল ১৪নং মাগুরখালী ইউনিয়ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৭/১ ফোল্ডার আওতাধীন মাগুরখালী ইউনিয়নের শিবনগর, পূর্বপাতিবুনিয়া, হোগলাবুনিয়া, পশ্চিমপাতিবুনিয়া, ঝরঝরিয়া, কাঠালিয়া,
ব্রহ্মারবেড, বৈঠাহারা, শেখেরট্যাক, মহাদেবপুর, মাগুরখালী, কোড়াকাটা, খোরেরাবাদ, হেতাইলবুনিয়া, চিত্রায়ারী, পারমাগুরখালী, গজালীয়া, কাঞ্চননগর, লাঙ্গলমোড়া, আলাদিপুর ও নাথেরকুল গ্রাম মিলে প্রায় ১৮ হাজার লোকের বসবাস।

শহর থেকে এলাকাটি দূরে হওয়াতে এ যাবৎ কাল তেমন কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এখানে। চলাচলের ভালো কোন রাস্তা না থাকায় এলাকার মানুষ সীমাহীন দুর্ভোগ সহ্য করে আসছে সারা জীবন। এখানকার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা। নৌকা যোগে তারা গ্রামের নিজের বাড়ি থেকে অন্যদের বাড়িসহ শহরে যাওয়া আসা করত। রাস্তাঘাট যা একটু ছিল তা বর্ষাকালে হাঁটু কাঁদা হয়ে যেতো। ফলে শহরের সঙ্গে মাগুরখালী এলাকার মানুষের যোগাযোগ একেবারই বিচ্ছিন্ন হয়ে যেত বলা যেতে পারে। সেই সময় অনেক অসুস্থ রোগীকে অকালে প্রাণ হারাতেও হয়েছে চিকিৎসার অভাবে।

 

যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় এক সময় মাগুরখালীর মানুষ শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
বর্তমান সরকারের আমলে মাগুরখালীতে প্রায় সব সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়নকাজ চলছে। মাগুরখালী ইউনিয়নে ছোট বড় মিলে প্রায় ১০০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। যার মধ্যে ৮০ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং ও ইটের সোলিং দ্বারা উন্নয়ন হয়েছে।

 

প্রায় আড়াইশ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ মাগুরখালীতে বাস্তবায়নের হতে চলেছে। মাগুরখালী ইউপি চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ সানা বলেন, সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সুফল পুরো পুরিভাবেই পাচ্ছেন মাগুর খালীবাসী। এ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করতে খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র যেভাবে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছেন তাতে মাগুরখালীবাসী তাঁর কাছে চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকবে। মাগুরখালী ইউনিয়নকে উন্নয়নের রোলমডেল বাস্তবায়ন করতে মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র এমপির ঐকান্তিক প্রেচেষ্টায় শহরের সঙ্গে প্রত্যন্ত এই অঞ্চলটির সেতু বন্ধন হতে যাচ্ছে।

 

শিবনগর-চটচটিয়া ঘাটে গ্যাংরাইল নদীর ওপর ২৮কোটি ৫১ লাখ টাকা বরাদ্দে ৩১৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ প্রায় শেষের পথে। আগামী ফেব্রুয়ারি নাগাদ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে সেতুটি। এটা হলে দুই জেলা শহর তথা খুলনা ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মানুষ ডুমুরিয়া – কপিলমুনি হয়ে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন যেমনি বাচবে তাদের সময় তেমন বাচবে তাদের অর্থ।

 

এ ছাড়া আমুড়বুনিয়া, চিত্রামারী ও পশ্চিম পাতিবুনিয়ায় গ্রামীণ ছোট খালের ওপর কালভার্ট নির্মাণ
হয়েছে। তিনি বলেন, মাগুরখালীর প্রায় অলিগলি পাকা করার কাজ চলছে। এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র বলেন, ডুমুরিয়ার মাগুরখালী আর অবহেলিত নেই। সরকারের সারা দেশের উন্নয়নের ছোঁয়া মাগুরখালীতেও পৌঁছে গেছে। একটা সময় সেখানে রাস্তাঘাটসহ উন্নয়নমূলক কিছুই
ছিল না। এখন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে আমরা মাগুরখালীসহ ডুমুরিয়া উপজেলার প্রতিটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন করতে পেরেছি।

 

 

মাগুরখালী আর ডাউন নয় এখন টাউনে পরিণত হয়েছে। চটচটিয়া ব্রিজ চালু হলে মানুষ খুব সহজেই
পাইকগাছা ও খুলনা শহরে পৌঁছাতেপারবে। এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে। একটি সেতু বদলে দিতে পারে দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা। আমাদের ডুমুরিয়ার স্বপ্নের চটচটিয়া ব্রীজ নির্মানের ফলে খুলনার কয়রা, পাইকগাছা , ডুমুরিয়া উপজেলা ও সাতক্ষীরার তালা উপজেলার মানুষের সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এলজিইডি গ্রামীন যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন করার ফলে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম শহরে রুপান্তরিত হচ্ছে। এলজিইডি বর্তমান সরকারের আমার গ্রাম আমার শহর বাস্তবায়নের অগ্রনি ভুমিকা পালন করছে।