আবুল কালাম,ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের ৩২ নং
বদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৪৩ ইং সালে ততকালী বৃহত্তর বালিপাড়া ইউনিয়ান প্রেসিডেন্ট মুনসুর আলী আহম্মেদ হাওলাদার বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ইন্দুরকানী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে বদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থান।গত ২০২২/২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে উপজেলার
৬৯ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রথম স্থান অধিকার করে। বিদ্যালয়টিতে রয়েছে ৫ জন শিক্ষক।
একটি ভবনে ৪ টি শ্রেণিকক্ষে পড়াশোনা করছে ১৫১ জন শিক্ষার্থী। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটি
শ্রেণিকক্ষের ভেতরের দেয়ালে পশুপাখি, ফল ও ফুলকে চিত্রের মাধ্যমে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, জসীমউদ্দীন, বেগম রোকেয়া, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, শের-ই–বাংলা এ কে ফজলুল হক, আহসান হাবিব, নবাব সিরাজদৌলা, শহীদ তিতুমীর, ঈশা খাঁসহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির
ছবি রয়েছে শ্রেণিকক্ষের দেয়ালে দেয়ালে। দেয়াল জুড়ে মনীষীদের বাণী ও বিভিন্ন চিত্রকর্মে ভরা। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরাও নানাভাবে তাদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। গত ৫ বছরে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় বদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও অকৃতকার্য হয়নি। বাল্যবিবাহ ঠেকাতে শিক্ষকদের নেতৃত্বে রয়েছে মনিটরিং সেল।
দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্র আব্দুল্লাহ আহনাফ নাবিলের পিতা বলেন, বিদ্যালয় আমার বাড়ির খুবই নিকটে, বর্তমান প্রধান শিক্ষক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমুল পরিবর্ত ঘটেছে। বিশেষ করে ছাত্র ছাত্রীদের আনন্দ দেওয়ার জন্য তিনি বিদ্যালয়ের পরিবেশটা সুন্দর করেছে ছাত্র ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসলে বাড়ি যেতে চায় না এবং পাঠদানের ক্ষেত্রে শিক্ষকরা খুবই
আন্তরিক। শিক্ষার্থীরা স্কুলে না আসলে হোম ভিজিট করে খোজ খবর নেন তিনি।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বিদ্যালয়টিকে শ্রেষ্ঠত্ব এনে দিয়েছে। এটা অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা থাকবে। পড়াশোনা, মনোরম পরিবেশ, বিভিন্ন ব্যতিক্রমী উদ্যোগের কারণে উপজেলার মধ্যে বিদ্যালয়টি দ্বিতীয় স্থান নির্বাচিত হয়েছে।
ভবিষ্যতে ও সেই ধারা অব্যাহত থাকুক এমনটাই আমাদের চাওয়া। আমাদের বিদ্যলয়টিতে বাউন্ডারি ওয়াল এবং বাচ্চাদের খেলাধুলা ও আনন্দ বিনোদনের জন্য দোলনা ও খেলাধুলা সামগ্রী খুবই প্রয়োজন।
প্রধান শিক্ষক ফিরোজ রব্বানী বলেন, শতভাগ পাস নিয়ে উপজেলায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বিদ্যালয়টি। প্রতি বছরই শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে কয়েকজন সরকারি বৃত্তি পাচ্ছে। উপজেলার মধ্যে একমাত্র আমাদের প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে সি.সি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রীত। প্রতিটি শ্রেনীকক্ষে সি.সি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে খুব শীগ্রই বাস্তবায়ন করা হবে। বাল্যবিবাহ ঠেকাতে প্রতি মাসে মা সমাবেশের আয়োজন করা হয়। শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রমে বিদ্যালয়ের ফলাফলও চমৎকার। আমাদের বিদ্যালয়ে একটি মানবতার দেয়াল রয়েছে সেখান থেকে অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরন করা হয়। এত কিছুর পরেও বিদ্যালয়ে কিছু সিমাবন্ধতা আছে সেই কারনে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার জন্য দুটি ক্লাশ রুম, ওয়াস বøক,শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বাউন্ডারি দেয়াল এবং খেলাধুলার সামগ্রী খুবই প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ এই বিষয় গুলোকে গুরুত্ব দিলে ভবিষ্যতে বিদ্যলয়টি আরো এগিয়ে নেয়া সম্ভব।
এবিষয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল হাকিম বলেন, প্রধান শিক্ষক ফিরোজ রব্বানীর কর্মদক্ষতা খুবই ভাল এবং তার সকল সহকর্মীরা খুবই আন্তরিক। বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল করার জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে। এগুলো তো একবারে আসেনা পর্যায় ক্রমে আসবে। এছাড়া বিদ্যালয়টিকে ইউনিয়ন মডেল প্রতিষ্ঠান করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
https://www.kaabait.com