লাইফস্টাইল: ঘর বা আবাস আমরা যতœ নিয়ে গড়ে তুলি। যান্ত্রিক শহরে নিজের মতো করে ঘর তৈরি করা বেশ কঠিন। মধ্যবিত্ত পরিবারে ঘরের সাজ অনেক সীমার মধ্যে রাখতে হয়। ঘরের সৌন্দর্য তৈরি করতে বা নতুন আঙ্গিক আনতে পর্দার জুড়ি নেই। সেই পর্দার গল্প লিখছেন স্থপতি ফওজিয়া জাহান। একটা সময়ে পর্দা শুধু ঘরের সুরক্ষা আর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় ব্যবহৃত হতো। সেই গÐি পেরিয়ে পর্দা এখন আপনার ঘর বা অ্যাপার্টমেন্টের বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনার ঘরের পর্দা আপনার ব্যক্তিত্ব ও রুচির পরিচয় দেয়। শুধু তাই নয়, পর্দা আপনার মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পর্দা নির্বাচন করা সহজ কাজ নয়। পর্দা নির্বাচনের যেসব দিক মাথায় রাখবেন তা জেনে নিন। পর্দা নির্বাচনের সময় পর্দার মানের দিকে খেয়াল রাখুন। ভালো মানের ফেব্রিকের পর্দা ঘরের পরিবেশের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। কাপড়ের মানের ওপরে পরিষ্কার করার সুবিধা-অসুবিধা নির্ভর করে। খেয়াল রাখতে হবে, পর্দার কাপড়টি যেন খুব সহজে ধুলাবালি শোষণ না করে। সঙ্গে অবশ্যই চলতি সময়ে পর্দার স্টাইল এবং ডিজাইনও মাথায় রাখতে হবে। পর্দা নির্বাচনে রং আর ডিজাইন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ঘরের দেয়াল ও আসবাবের রঙের সঙ্গে মিল রেখে পর্দার রং নির্বাচন করা উচিত। ঘরের দেয়ালের রঙের মতো একই রং কিংবা গাঢ রঙের পর্দা বেশ মানানসই হতে পারে। আবার আসবাবের রঙের বিপরীতের রং ঘরের আবেদন বাড়াতে সাহায্য করবে। রঙের সঙ্গে পর্দার ডিজাইন খুব জরুরি। পর্দা হতে হবে আপনার ঘরের ডেকোরেশন স্টাইল ও আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী। যদি ঘরের সাজসজ্জায় আধুনিকতা ও গাম্ভীর্য আনতে চান, তাহলে হালকা এক রঙের লাইন চেক বা জ্যামিতিক প্যাটার্ন ব্যবহার করতে পারেন। আপনি যদি ক্লাসিক ও ইউরোপীয় ডেকোরেশন স্টাইল পছন্দ করেন, তাহলে ফ্লোরাল ডিজাইনের পর্দা ব্যবহার করা উচিত। যদি সরলসোজা বা মিনিমালিস্ট চিন্তধারার অনুসারী হন, তাহলে এক রঙের পর্দা আপনার জন্য মানানসই হবে। দেশি আঙ্গিকে ঘর সাজাতে চাইলে পর্দায় দেশি কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। দেশীয় বাটিক, বøক, তাঁতের কাপড় বা গামছার কাপড় খুব জনপ্রিয় এখন পর্দা হিসেবে। বাঁশের চাটাইকে পর্দা হিসেবে আধুনিক ট্রেন্ড হিসেবে ব্যবহারের চল এখন বেশ খেয়াল করা যায়। পর্দা আপনার ঘরের প্রাইভেসি বজায় রেখে বাইরের আলোকে বাধা দেয়। আপনি যদি ঘরে প্রাকৃতিক আলো চান, তাহলে পর্দা হালকা রঙের আর পাতলা কাপড়ের হওয়া উচিত। ঘরের প্রাইভেসি গুরুত্বপূর্ণ হলে ভারি ও গাঢ় রঙের পর্দা ব্যবহার করতে হবে। যদি গোপনীয়তা ও আলো উভয়েই চান, তাহলে দুই লেয়ারের পর্দা ব্যবহার করা যেতে পারে। পর্দার লেআউট ও স্টাইল নির্বাচন করার সময় ঘরের আয়তন, উচ্চতা, ব্যক্তিগত পছন্দ আর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা মনে রাখতে হবে। ¯øাইডিং পর্দা, রোলডাউন কার্টেন, রোমান শেড, বাঁশের চাটাইসহ বিভিন্ন ধরনের পর্দা এখন জনপ্রিয়। যদি ঘরের পর্দায় নতুনত্ব আনতে চান, তাহলে একেবারে অপ্রচলিত কোনো উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন। প্রিয় অথবা অব্যবহৃত শাড়ি দিয়ে পর্দা তৈরি করতে পারেন। গামছা দিয়ে তৈরি করা যেতে পারে রোমান শেড। শীতল পাটি দিয়ে হতে পারে রোলডাউন কার্টেন। সব শেষে একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না- পর্দার স্থায়িত্ব ও ব্যবহারযোগ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত বিরতিতে পর্দা ধুতে হবে আর কয়েক বছর পর পর বদলাতে হবে।
https://www.kaabait.com