শ্যামনগরের আলোচিত প্রধান শিক্ষক পরিমল কর্মকারের বিরুদ্ধে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভনে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তদন্ত অব্যাহত- জানালেন শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হক।
শ্যামনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৬০ নং শিশু শিক্ষা নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পরিমল কর্মকার বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিয়নের চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী মহল শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অর্ধশতাধিক অভিযোগ দাখিল করিলে, নির্বাহী কর্মকর্তা উক্ত অভিযোগগুলো প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হকের কাছে প্রদান করেন, তদন্ত স্বাপক্ষে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, আমার কাছে প্রধান শিক্ষক পরিমল কর্মকারের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ দাখিল হয়েছে, অভিযোগে যে অর্থের কথা বলা হয়েছে তা ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকা হবে, বিষয়টি নিয়ে আমি একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান বলেন, উক্ত পরিমল কর্মকার সাবেক সংসদ সদস্যের আশীর্বাদ পুষ্ট হয়ে উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মচারী নিয়োগ ও শিক্ষক বদলির দায়িত্ব নিয়ে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে উক্ত প্রধান শিক্ষক পরিমল কর্মকার। হঠাৎ দেশের পরিবর্তন হওয়ায় ভুক্তভোগী মহলকে চাকরি দিতে না পারায় ও বদলি, অপসারণ না করতে পারায় বিপাকে পড়েছে ধুরন্ধর প্রধান শিক্ষক পরিমল কর্মকার।
উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের রামপ্রসাদ জানান, পরিমল কর্মকার চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, বর্তমানে সে শ্যামনগর সদরে দুইটা বাড়ি ,খুলনাতে একটা বাড়ি ও ভারতের সটলেকে একটি বাড়ি করেছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলার বাদঘাটা গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন ,আমার ছেলে ১৬০ নং শিশু শিক্ষা নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর শিক্ষার্থী কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রধান শিক্ষক পরিমল কর্মকার স্কুলে ঠিক মতন আসেন না, স্কুলের প্রতি তার কোন খেয়াল নেই। বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে বাইরে বাইরে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।
শ্যামনগর পৌরসভার কাউন্সিলর এস কে সিরাজুল ইসলাম বলেন, পরিমল কর্মকার চাকুরীর দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ও বদলি অপসারণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার অজুহাতে সাধারণ শিক্ষক সহ বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কয়েকটি বাড়ি ও শ্যামনগর সদরে দ্বিতল ভবন বিশিষ্ট একটি গার্মেন্টস এর দোকান করে সেখানে অধিকাংশ সময় দিয়ে থাকেন। তার স্কুলটি আমার ওয়ার্ডে হওয়ায় তিনি ঠিক মতন স্কুল করেন না ,বলে আমার এলাকার সাধারণ মানুষের বহু অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে উক্ত স্কুলের শিক্ষার্থীর অভিভাবকগণ প্রতিনিয়ত আমার কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে থাকেন। উক্ত পরিমল কর্মকার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে স্কুলটিতে ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে অবস্থান করছেন। ইতিমধ্যে আমি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছি। তাকে দ্রুত অপসারণ করা না হলে অভিভাবকগণ বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে উক্ত দুর্নীতিবাজ ধুরন্ধর আলোচিত প্রধান শিক্ষক পরিমল কর্মকারকে অপসারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে প্রধান শিক্ষক পরিমল কর্মকার বলেন, আমি ইতিমধ্যে অধিকাংশ মানুষের টাকা পরিশোধ করেছি। এছাড়া আমি ঠিকমত স্কুলে সময় দিচ্ছি । তবে আমার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র চলছে।