স্পোর্টস: টসের জন্য হার্দিক পান্ডিয়া মাঠে আসার পরই গ্যালারি থেকে ভেসে এলো ‘রোহিত, রোহিত’ চিৎকার। টসের পর যখন সঞ্চালক রাভি শাস্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলেন পান্ডিয়া, তখন গ্যালারির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাকে দেওয়া হচ্ছিল দুয়ো। পরে যার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল ম্যাচের মাঝেও। সবশেষে যোগ হলো দলের হার। গুজরাট টাইটান্স থেকে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সে ফেরার পর প্রথম ম্যাচের স্মৃতি মোটেও সুখকর হলো না পান্ডিয়ার জন্য। অপরদিকে শুবমান গিল আইপিএলে নেতৃত্বের অভিষেক রাঙালেন জয় দিয়ে। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযান শুরু করল তার দল গুজরাট টাইটান্স। আইপিএলের গত দুটি আসরে এই গুজরাটের হয়ে খেলেন পান্ডিয়া। ২০২২ সালে গুজরাটের অভিষেক আসরে চমকপ্রদ নেতৃত্ব দিয়ে দলকে শিরোপা এনে দেন তিনি। গত আসরে এই অলরাউন্ডারের নেতৃত্বে আবার ফাইনাল খেলে তারা হেরে যায় শেষ বলে। কিন্তু এবারের আসরের আগে নাটকীয় পালাবদলে মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিকে গুজরাট ছেড়ে পান্ডিয়া পাড়ি জমান তার পুরোনো দল মুম্বাইয়ে। সেখানে রোহিত শার্মাকে সরিয়ে অধিনায়ক করা হয় তাকে। মুম্বাইকে নেতৃত্ব দিয়ে পাঁচটি আইপিএল শিরোপা জেতানো রোহিতকে অধিনায়কের পদ থেকে সরানোটা সমর্থকদের অনেকেই ভালোভাবে নেয়নি। একদিকে পান্ডিয়ার গুজরাট থেকে চলে যাওয়া, অন্যদিকে রোহিতকে মুম্বাইয়ের নেতৃত্ব থেকে সরানো, দুই দলের সমর্থকদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই যেন রোববার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে দেখা গেল। পান্ডিয়া যখনই বল হাতে নিলেন, দুয়ো দিলেন দর্শকরা। যা নজর এড়ায়নি ধারাভাষ্যে থাকা সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক কেভিন পিটারসেনেরও, “আজ সন্ধ্যায় আহমেদাবাদে হার্দিককে ভালোভাবে স্বাগত জানানো হয়নি। যতবারই সে বলের কাছে গিয়েছে, ততবারই শিস দেওয়া হয়েছে। ভারতে এমন কিছু খুব একটা দেখিনি আমি।” এদিন টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে পান্ডিয়া নিজেই শুরু করেন বোলিং। সব মিলিয়ে ৩ ওভার বোলিং করে ৩০ রান দিয়ে কোনো উইকেট তিনি পাননি। ২০ ওভারে গুজরাট করে ১৬৮ রান। রান তাড়ায় ১২ ওভার শেষে ২ উইকেটে ১০৭ রানের সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল মুম্বাই। এরপর পথ হারিয়ে ফেলে তারা। শেষ ২ ওভারে যখন দরকার ২৭ রান, তখন সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন পান্ডিয়া। শেষ ওভারে ১৯ রানের সমীকরণে উমেশ ইয়াদাভের প্রথম দুই বলে ছক্কা ও চার মেরে তিনি আশা জাগান জয়ের, কিন্তু পরের বলেই আউট হয়ে যান ক্যাচ দিয়ে, ৪ বলে করেন ১১ রান। শেষ পর্যন্ত ৬ রানে হেরে যায় মুম্বাই। নেতৃত্বের অভিষেকে গিল ব্যাট হাতে খুব বড় কিছু (২২ বলে ৩১) করতে না পারলেও শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসি থাকল তার মুখেই। পান্ডিয়া চলে যাওয়ার পর গুজরাটের নেতৃত্ব তুলে দেওয়া হয় গিলের কাঁধে, গত দুই মৌসুমে দলটির হয়ে ব্যাট হাতে তার পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। তবে টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা বলতে ছিল ২০১৯-২০ মৌসুমে সৈয়দ মুশতাক আলি ট্রফিতে তার রাজ্য দল পাঞ্জাবকে দুটি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়া। ব্যাট হাতে এরই মধ্যে ক্রিকেট বিশ্বে সামর্থ্যের ছাপ রাখা ২৪ বছর বয়সী ক্রিকেটার এবার বড় মঞ্চে নেতৃত্বের শুরুটাও করলেন দারুণভাবে। বোলার পরিবর্তন, ফিল্ডিং সাজানো, সবকিছুই বেশ ভালোভাবে করেন তিনি। যার ফলাফল, ১৬৮ রানের পুঁজি নিয়েও দলের দারুণ জয়।
https://www.kaabait.com