পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার পাইকগাছায় ইট ভাটার কাজ বন্ধ করার চেষ্টা সহ দুই ভাটা শ্রমিককে মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে। পূর্বের ভাটার পাওনাদার লোকজনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন বর্তমান ভাটার মালিক ও শ্রমিকরা। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নিয়েছে। উল্লেখ্য, উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের পুরাইকাটীতে ফাইভ স্টার নামে একটি ইট ভাটা রয়েছে। ইট ভাটাটি ২০২৩ সাল থেকে অ্যাডভোকেট এসএম মুজিবর রহমান ও মিরাজুল ইসলাম সহ কয়েকজন ব্যবসায়ী পরিচালনা করে আসছে। ২০২৩ সালের আগে ইট ভাটাটি শাহীন মাস্টার নামে একজন ব্যবসায়ী পরিচালনা করতো। তখন ইট ভাটার নাম ছিল এনএসবি ব্রিকস। ওই সময় তিনি ইট বিক্রয়ের কথা বলে এলাকার শত শত মানুষের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নেন। বিভিন্ন সমস্যার কারণে তিনি ইট ভাটাটি পরিচালনা করতে ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে মুজিবর মিরাজুল গংরা ইট ভাটাটি পরিপূর্ণভাবে চালু করলেও পূর্বের ভাটার পাওনাদাররা ইট ভাটাটি পরিচালনা করার ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছে এবং পূর্বের দেনা-পাওনার বিষয় আমাদের জানার কথা নয় বলে অভিযোগ করেন ইট ভাটা মালিক মিরাজুল ইসলাম। ভাটার ম্যানেজার সোহরাব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এলাকার ৩০/৪০ জন লোক হঠাৎ ইট ভাটায় প্রবেশ করে জোরপূর্বক ভাটার কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করে। এ সময় তারা দুই ভাটা শ্রমিককে মারপিট করে। আমাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান ভাটা শ্রমিক আয়ুব আলী ও আছাদুল ইসলাম। খবর পেয়ে থানার এসআই অমিত দেবনাথ, এসআই সাদ্দাম হোসেন ও এএসআই শেখ পলাশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় শেখ আবু জাফর, জামশেদ হোসেন, রফিকুল ইসলাম ও শেখ সোহরাওয়াদ্দী জানান, আমরা এলাকার শত শত লোক পূর্বের ইট ভাটা মালিক শাহীন মাস্টারের নিকট কোটি কোটি টাকা পাইবো। এ টাকা পরিশোধ না করে বর্তমান ইট ভাটা মালিকরা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ইট ভাটা পরিচালনা করছে। আমরা এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য সহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছি। ঘটনার দিন আমরা ইট ভাটায় যায় এবং বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে নিরসন না হওয়া পর্যন্ত ভাটার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার কথা বলি। তবে কোন ভাটা শ্রমিককে মারপিট করা হয়নি বলে তারা দাবী করেন। এ ব্যাপারে থানার ওসি ওবাইদুর রহমান বলেন, এখন পুরো ইট ভাটার মৌসুম চলছে এমন সময় ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করতে যাওয়া সঠিক বলে মনে হয়নি। ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। শুধু ইট ভাটা নয় এলাকার সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা পুলিশের নৈতিক দায়িত্ব। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ সহ শান্তিপূর্ণ সমাধানে উভয় পক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে থানা পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কাজ বন্ধ করার চেষ্টা ও ভাটা শ্রমিককে মারপিটের অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছিল বলে জানিয়েছে ভাটা মালিক মিরাজুল ইসলাম।