মেহেদী হরিৎ
এফএনএস সাহিত্য : এক বিভৎস খবরের মধ্য দিয়ে বসন্তের আগমন ঘটলো। বিশজন কিশোর ধারালো বেøডের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত করলো নিজেদের শরীর। মাথার তালু থেকে কপাল, কাঁধ থেকে হাতের বাহু সুনিপুন দক্ষতায় তারা ব্যবচ্ছেদ করেছে। পরদিন বসন্ত এ কথা কি তারা জানত না? হয়তো রোমান্টিকতার সর্বোচ্চ ধাপে তারা পৌঁছে গিয়েছিলো। হয়তো পৃথিবীকে গালি দেয়ার এর চেয়ে ভালো কোন ভাষা তাদের জানা ছিল না।
বসন্তের কি রঙ তা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। তবে এটা নিশ্চিত রক্তের রঙ লাল। লাল লাল রক্তগুলো সকাল থেকে মাথার ভিতর ঘুরপাক খাচ্ছে। বারবার বমিবমি ভাব হচ্ছে। রক্তপাতের যন্ত্রণা যেন গ্রাস করেছে মস্তিষ্ককে।
তবুও বের হলাম, প্রয়োজনে। আশপাশের মানুষের পোশাক আশাক দেখে মনে হচ্ছে আজ বসন্ত। আসমানের নীল আর গাছের পাতাগুলো দেখে মনে হচ্ছে আজ বসন্ত। কিন্তু যখন অন্তরচক্ষু দিয়ে মানুষের অন্দরমহল দেখতে আরম্ভ করলাম মনে হতে থাকল প্রকৃত বসন্ত আসে নাই। মানুষগুলো সব যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। যেন প্রেমিকের ভারে নুয়ে পড়ছে প্রেমিকা, প্রেমিকার ভারে নুয়ে পড়ছে প্রেমিক। তাদের পা চলে না, হাত চলে না। কারো কারো সবকিছু চললেও মন চলে না।
কানে একটা শব্দ আসায় ক্ষণিক দাঁড়ালাম। রিকশার হুড তোলা; ভিতর থেকে কেউ একজন বলছে, আইজকা কি দিন তুমি জান? নিশ্চয়ই ওপাশ থেকে উত্তর এসেছিল, না জানি না। তারপর সে বললো, আইজকা হইল বসন্ত। তারপর রিকশার ভিতর থেকে আবার শব্দ এলো, কাইলকা কি দিন জানো? ওপাশ থেকে নিশ্চয়ই আগের মতই উত্তর এলো, জানি না। রিকশার ভিতর থেকে শব্দ এলো, কাইলকা হইল ভালোবাসার দিন, কাইলকা আমি রিকশা চালামু না, সারাদিন তোমারে নিয়া ভাবমু আর মাঝে মইধ্যে তোমার লগে পিটিশ পিটিশ আলাপ করমু। তারপর হঠাৎ বিকট ধমক, ধূর মাগি তুই একটা বেরসিক, তোর লগে কোন কথা নাই, তোরে আমি তালাক দিয়া দিমু।
বসন্ত বড় বেইমান। আসতে গিয়েও আসে না।
https://www.kaabait.com