মো. আল আমিন শেখ: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে গাছপালা ভেঙ্গে লন্ডভন্ড। দুটি ইউনিয়নের তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ চার শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত। পিরোজপুর– বাগেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের বাধাঁল নামক স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি পরে দু‘ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ, ১০ ঘন্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। মোরেলগঞ্জ উপজেলার বনগ্রাম ও হোগলাপাশা ইউনিয়নের ১২শ একর কলা খেতে সাড়ে ৩শ কলা চাষীদের অপূরণীয় ক্ষতি।
৭ এপ্রিল (রবিবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কম-বেশী ক্ষয়ক্ষতি হলেও বনগ্রাম ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী বহরবৌলা, বনগ্রাম, শ্রীপুর জয়পুর, গ্রামে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একই ভাবে হোগলাপাশা ইউনিয়নের হোগলাপাশা, বৌলপুর, মধুরকাঠি, গোবিন্দপুর, কালিয়ামেগা, চর গোবিন্দপুর, শৌলখালি, ছোট হরিপুরসহ ১৩টি গ্রামে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট বড় অসংখ্য গাছপালা ভেঙে পড়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সড়ক, বসত ঘরসহ বিভিন্ন স্থপনা আংশিক ও সম্পূর্ন বিধ্বস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও হোগলাপাশা ও বনগ্রাম ইউনিয়নের ৪ শতাধিক কলা চাষিদের কোটি টাকার কলাগাছ ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। অন্যান্য ফসলেরও ক্ষতি ব্যাপক হয়েছে।
প্রায় আধা ঘন্টার ব্যাপী এ ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বলভদ্রপুর কাঠিপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দেয়ালের ওপারে গাছ পড়ে দেয়াল ভেঙে পড়েছে। বনগ্রাম সেঞ্চুরি ইন্সটিটেশন বিদ্যালয় ও সম্মিলনী শিক্ষা নিকেতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষের ছাউনির টিন উড়িয়ে নিয়ে গেছে।
এ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মোস্তফা শেখ, আব্দুর রব শেখ, মোহাম্মদ সেকেল গাজী, পঙ্কজ বাওয়ালি, স্বপন সেন, চান মালিসহ একাধিকরা বলেন, হঠাৎ ঘরের উপরে গাছ পড়ে বিকট শব্দে আমরা আঁতকে উঠি। ঘরের মালামালসহ ছেলে মেয়েদের বইপত্রও ভিজে গেছে। বনগ্রাম সেঞ্চুরি ইনস্টিটিউশন বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক মিতা রাণী দে, সহকারী শিক্ষক কার্তিক চন্দ্র মন্ডল, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মৃণাল কান্তি দাস, ওবায়দুল সেখ বলেন, তাদের বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের সম্পূর্ণ টিন উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বড় বড় ৫০ টি চম্বল, মেহগনি গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে বিদ্যালয়ের ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
বনগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান রিপন চন্দ্র দাস বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে তার ইউনিয়নের দেড় শতাধিক বসত বাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। ৭শ একর কলা চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হোগলাপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে তার ইউনিয়নে ২৫০ টি বসত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ব্যাপক গাছপালা ভেঙেছে, সম্মেলনী শিক্ষা নিকেতন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাউনির সম্পূর্ণ টিন উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বৌলপুর সড়কের উপর পড়ে থাকা বড় গাছ অপসারণের জন্য স্থানীয় ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে তিনি সকাল থেকে কাজ করাচ্ছেন। ক্ষতির বিষয়গুলো দু’ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছেন বলে জানান তারা।
এ সম্পর্কে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল জাবির বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির বিষয় সরজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকার নিরূপণ করে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দপ্তরে পাঠানো হবে।
https://www.kaabait.com