আন্তর্জাতিক: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যে গুলিতে অন্তত দুইজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চুরাচাঁদপুর জেলায় বিক্ষোভে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এই ঘটনা ঘটে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যের সঙ্গে সেলফি তুলে বরখাস্ত হন ভারতের মণিপুর রাজ্য পুলিশের এক হেড কনস্টেবল। ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছিল। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দুইজন নিহত এবং ২৫ জন আহত হন বলে জানা গেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, সিয়ামলালপল নামের অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্য একটি পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত বাংকারে সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের সঙ্গে সেলফি তুলেছিলেন। চুরাচাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার শিবানন্দ সুরভে বলেন, “চুরাচাঁদপুর জেলা পুলিশের সিয়ামলালপলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের কথা ভাবা হচ্ছে। কারণ একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে গত ১৪ ফেব্রæয়ারি তাঁকে সশস্ত্র লোকদের সঙ্গে সেলফি তুলতে দেখা গেছে।” ঘটনার পর বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করার দাবিতে প্রায় ৪০০ মানুষ সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে জেলা পুলিশ প্রধানের কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং ঘেরাও করে রাখে। জ্যেষ্ঠ এক পুলিশ কর্মকর্তা ফোনে জানিয়েছেন, “বিক্ষোভকারীরা প্রধানের কার্যালয়ের গেটে উঠে পড়ে, বেশ কিছু যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয় এবং রাতে জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করে।’ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, হেড কনস্টেবলকে অন্যায়ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাঁকে পুনর্বহাল করা হোক। নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে এবং এরপর গুলি ছোড়ে। প্রায় ২৫ জন আহত হয়েছেন এবং তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’ এ ঘটনায় আগামী পাঁচ দিনের জন্য চুড়াচাঁদপুরে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। মণিপুরের কুকি-জো উপজাতি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুর জেলায় ঘটনাটি ঘটে। অর্থনৈতিক সুবিধা এবং কোটা ভাগাভাগি নিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি এবং সংখ্যালঘু কুকি স¤প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে, গত মে মাসে ভয়াবহ লড়াই শুরু হয়। এর পর থেকে সংঘর্ষে প্রায় ২০০ জন নিহত হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। সূত্র : রয়টার্স, এনডিটিভি
https://www.kaabait.com