• মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫০
সর্বশেষ :
নির্বাচিত হতে পারলে খাজরা ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা ও কোনো কাঁচা রাস্তা : সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন ব্রহ্মরাজপুরে দীর্ঘদিন ধরে ওয়ারেশ নিয়ে বিরোধ: অবশেষে আদালতের রায়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি কালিগঞ্জে পলিথিন ও প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে গণশুনানি অনুষ্ঠিত ডুমুরিয়ায় কোটি কোটি টাকার শীতকালীন সবজি উৎপাদন ডুমুরিয়ায় বিশেষ অভিযানে পুশকৃত চিংড়ি জব্দ, অর্থদণ্ড তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত! নারায়ণগঞ্জে ব্র্যাকের ডেঙ্গু প্রতিরোধ ক্যাম্পেইন উপলক্ষে সভা পাইকগাছায় শীতের শুরুতে বাড়ছে লেপ-তোশকের চাহিদা ডুমুরিয়ায় নিসচার ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত নির্বাচনী প্রচারণা উপলক্ষে মাগুরা-২ আসনে জামায়াতের বিশাল মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা

অফিস সহকারী যখন ডাক্তার 

নওগাঁ প্রতিনিধি / ২৪৪ দেখেছেন:
পাবলিশ: মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
অফিস সহকারী যখন ডাক্তার 

নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলার ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাহাদত হোসেন। তিনি ঐ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট অর্থপেডিক্স হিসেবে কর্মরত আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি মাঝে মাঝে অনুপস্থিত থাকেন। আর এই সুযোগ বুঝেই উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী নুরু।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, যখন সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক যখন সেখানে অনুপস্থিত থাকেন। তখন সে সেখানে ঝুপ বুঝে কুপ মেরে  তিনি তখন রোগী দেখেন। এবং সে স্বাস্থ্য কমপ্লেসে আগত রোগীদের  চিকিৎসা করে টাকাও নেন।  আবার চিকিৎসা দেওয়ার পর কৌশল হিসেবে রোগীর কাছ থেকে সেই টাকা নেন চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক সূত্রের জানা গেছে, যখন  চিকিৎসক শাহাদত হোসেন নিয়মিত অফিস করেন না। এমন অভিযোগ পাওয়ার পর  বেশ কয়েক দিন সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা অভিযুগের সত্যতা পেয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে গত শনিবার ২১ আগষ্ট সকালে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে ডা.শাহাদত হোসেনের চেম্বার তালাবন্ধ থাকতে দেখতে পান সাংবাদিকররা।
তাছাড়া  হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, শনিবার ডাক্তার শাহাদত হোসেন অফিসে আসবেন না। কি কারণে তিনি আসবেন না জানতে চাইলে তার সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এরপর আউটডোরে ডাক্তার শাহাদত হোসেনের চেম্বারের সামনে দেখা যায় সেবা নিতে আসা আজিরুন বেগম (৬০) নামে একজন হাতভাঙা রোগী বসে আছে। তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, গত ২২ দিন আগে রাস্তা দিয়ে হাটতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার কারণে আমার ডান হাত ভেঙ্গে যায়। এরপর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আমার হাত প্লাস্টার করে দেয়। এবং দশ দিন আউটডোরের পাঁচ নং রুমে দেখাতে বলে। দশ দিন পর পাঁচ নং রুমের ডাক্তার আমার হাত দেখে এক্সরে রিপোর্ট করতে বলে। আজকে কিছুক্ষন আগে রিপোর্ট দেখে আমার হাত প্লাস্টার করে দিলো। এবং চা-মিষ্টি খাওয়ার জন্য চার শত টাকা নিয়েছেন। এবং আগেও তিন শত টাকাও নিয়েছেন বলে তিনি জানান।  এক মাস পর আবার এখানে আসতে বললেছেন। তখন ওনাকে জিজ্ঞেস করা হলে, ওই রুমের ডাক্তার আজকে আসেনি আপনাকে চিকিৎসা সেবা দিলো কে? এমন প্রশ্নের জবাবে সহজ সরল আজিরুন বেগম বলেন, সে নিজে পাঁচ নং রুমে আমার হাত দেখে চিকিৎসা করলো, এক্সরে রিপোর্ট দেখলো। একমাস পর আবার আসতে বললো। ডাক্তার দেখতে কেমন এমন প্রশ্নের উত্তরে সে বলে, ডাক্তারের দাড়ি আছে, একটু খাটো করে ফর্সা। তার মোবাইল নং লিখে দিছে। কোন কিছু হলে ফোন দেওয়ার কথা বলছে। আমি তো ডাক্তার কে চিনি না বাবা। যেই মানুষ আমার হাত দেখলো তাকেই আমি ডাক্তার মনে করছি। এরপর রোগীর কাছ থেকে নেওয়া মুঠোফোন নং এ ফোন দিলে অপরপ্রান্ত থেকে অফিস সহকারী পদে হাসপাতালে চাকরি করি বলে জানান নুরু ইসলাম।
আউটডোরের পাঁচ নং রুমে আজিরুন নামে কোন রোগীকে শনিবার চিকিৎসা দিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি শুধু হাতের প্লাস্টার করে দিয়েছি। কোনো টাকা পয়সা নেওয়ার কথা জানতে চাইলে চা মিষ্টি খাওয়ার জন্য চার শত টাকা নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন তিনি। এরপর ইনডোরে যেসব রোগী ভর্তি আছে। বেড সংকটের কারনে বারান্দার মেঝেতে ১৪ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে দেখা গেছে। বারান্দায় ফ্যান না থাকায় তীব্র গরমের মধ্যে রোগীরা অস্থিরতা বোধ করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে কয়েকজন রুগির  সাথে কথা বলে জানা গেছে। এ সময় উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তিকৃত রোগী  কিয়ামত, জুলেখাসহ কয়েকজন ভর্তি রোগী জানান  হাসপাতালের খাবার মান একেবারে ভালো না। মোটা চাল, খুব গন্ধ। এগুলো খাওয়ার চেয়ে না খাওয়ায় ভালো কিছু বলার নেই। এবিষয়ে জানতে চাইলে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক শাহাদত হোসেন মুঠোফোনে জানান  এর আগে নুরুর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তখন তাকে আমরা ডেকেছিলাম। কিন্তু তেমন কিছু পাইনি। তবে সে ডাক্তারের সহযোগী হিসেবে সহযোগীতা করে। কারণ আমাদের জনবল একটু কম। আর আমি মাঝে মাঝে বিভিন্ন কারণে অনুপস্থিত থাকি। তবে নিয়মিত অফিস করি। এ বিষয়ে আরো জানার জন্য  একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কানিজ ফারহানা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ সিভিল সার্জন ডাক্তার নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান  চিকিৎসক শাহাদত হোসেন এখানে ট্রেনিংএ আছেন। তাঁর অনুপস্থিতে অফিস সহকারী নুরুর চিকিৎসা ও টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান আমি বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম। আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলে দেখছি এবং কি ব্যবস্থা করা যায় সে বিষয়টিও তদন্ত করে  দেখা হবে।


এই বিভাগের আরো খবর

https://www.kaabait.com