আধুনিক এই যুগে সরকার এবং জনগণ সর্বক্ষেত্রে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। সরকার যেমন প্রতিনিয়ত জনগণকে নিয়ে কাজ করে। অপরদিকে জনগণও তার দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভরশীল। সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেদের প্রয়োজনে অনেকেই সরকারি অফিসে দৌড়ান।
নানা প্রয়োজনে মানুষকে হাঁপিয়ে তোলে নিরবিচ্ছিন্ন কাজের সংগ্রামে। সবকিছু ঠিক থাকলে কাজের ক্লান্তি ছন্দের দোলায় দোলায়িত হয়ে কণ্টকিত পথ মসৃণ হয়ে ওঠে। আর যদি সেই সবকিছুর কিছুতে একটু বিগ্ন ঘটে তবে জীবন হোঁচট খায় ঘোর অমানিশায়।
এমনই সংগ্রাম মুখর কাজের ক্ষেত্রে মুখথুবড়ে পড়েছে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলাবাসী। প্রতিনিয়ত চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন নানা কাজে উপজেলায় আসা মানুষগুলো।
উপজেলা অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কাজ বিহীন সময় কাটাচ্ছেন। ডিজিটাল এই যুগে বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে উপজেলা আইসিটি কর্মকর্তা না থাকায়।
জন্মনিবন্ধনসহ নানা কাজে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাধারণ মানুষগুলো প্রতিনিয়তই হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রয়োজনে মানুষ সরকারি অফিসগুলোতে যায়, তার কাজের সমাধা করতে। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় এক মাস হলো মহম্মদপুরে বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অফিস প্রধানের পদ শূন্য রয়েছে। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি), কৃষি কর্মকর্তা ও উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদ।
মহম্মদপুরের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনুর আক্তার ইতিমধ্যে যশোরের ঝিকরগাছায় বদলি হয়েছেন। সেখানে তিনি তার নিজ কর্মস্থলে যথাসময়ে যোগদান করেছেন। পাশাপাশি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ্ত রায় দিপন-কে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়। অজ্ঞাত কারণে তিনি আজও তার বর্তমান কর্মস্থলে যোগদান করেননি।অতিপ্রয়োজনীয় কাজের সমাধা কল্পে শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: বনী আমিন-কে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকায় সবসময় আসতে পারেন না। শুধুমাত্র প্রশাসনের অতি প্রয়োজনীয় কাজ থাকলে তিনি এই অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অতি গুরুত্বপূর্ণ পদটি প্রায় ফাঁকা থাকছে!
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হচ্ছেন ওই উপজেলার সর্বোচ্চ অভিভাবক। অথচ সেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদ অজ্ঞাত কারণে শূন্য পড়ে আছে। এতে জনগণের কাজের ব্যাপক অসুবিধা হচ্ছে। সেবা নিতে আসা মানুষগুলো চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
পাশাপাশি উপজেলার অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ সহকারী কমিশনার (ভূমি)। দীর্ঘদিন ধরে এই গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার পদটিও খালি রয়েছে। গত ১৩ আগষ্ট মো: সাদমান আকিফ মহম্মদপুর ভূমি অফিসে যোগদান করেন। যোগদানের অল্পদিনের মধ্যে তিনি পাঁচ মাসের প্রশিক্ষণের প্রয়োজনে বাইরে রয়েছেন। ফলে ভূমি অফিসের যাবতীয় কাজে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে জনসাধারণ।
এছাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পদটিও খালি রয়েছে। যা সেবা গ্রহীতা জনগণের কাজের ক্ষেত্র ভীষণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একজন সেবা গ্রহীতা মিজানুর রহমান অভিযোগের সুরে বলেন, “মহম্মদপুর উপজেলা ইউএনও এবং ভূমি অফিসের কর্মকর্তা না থাকায় আমাদের প্রয়োজনীয় কাজগুলো দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই ভোগান্তির শেষ কোথায়”?
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে মোবাইলে জানতে চাইলে তিনি জানান, খুলনা বিভাগীয় প্রশাসকের দপ্তরে জানানো হয়েছে। অতিদ্রুত মহম্মদপুর উপজেলায় নতুন নির্বাহী কর্মকর্তা যোগদান করবেন বলে আশা করছি।
https://www.kaabait.com