• শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:২৯
সর্বশেষ :
দেবহাটায় অ বৈ ধ বালু উত্তোলন করায় ইউএনওর ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা দেশকে এগিয়ে নিতে কনস্ট্রাকটিভ হতে হবে: শায়খ ড. আব্দুস সালাম আযাদী দেবহাটায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে তারুণ্যের উৎসব-২৫ অনুষ্ঠিত ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ঢুকে পড়েছে ছাত্র-জনতা, চলছে ভাঙচুর আশাশুনির শ্বেতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান এগিয়ে সরকারি কে বি এ কলেজের শিক্ষকের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত মণিরামপুরে কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনী মেলার উদ্বোধন ডুমুরিয়ায় গ্রাম আদালত কার্যক্রমের দ্বি-মাসিক সমন্বয় সভা অজ্ঞান পার্টির ক বলে এক যুবকের ক রু ন মৃ ত্যু বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন বিলীন! হাড়কাটা সড়ক নির্মাণে সীমাহীন অ নি য় ম দূ র্নী তির অভিযোগ

ডুমুরিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি আগের মত আর চোখে পড়ে না

শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া, খুলনা প্রতিনিধি  / ৩৮২ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
ঢেঁকি আগের মত আর চোখে পড়ে না

গ্রাম বাংলার তরুণী-নববধূ ও কৃষাণীদের কণ্ঠে ‘ও বউ চাল ভাঙে রে, ঢেঁকিতে পাড় দিয়া, নতুন চাল ভাঙে হেলিয়া দুলিয়া, ও বউ চাল ভাঙে রে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া’ এ রকম গান আর শোনা যায় না। অগ্রহায়ন-পৌষ মাসে কৃষক ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে কৃষাণীদের ঘরে ধানের নতুন চাল ভাঙা বা চাল গুঁড়া করা, আর সে চাল দিয়ে পিঠা, পুলি, ফিরনি, পায়েশ তৈরি করার ধুম পড়ে যায়। এছাড়াও নবান্ন উৎসব, বিয়ে, ঈদ ও পূজা’য় ঢেঁকিতে ধান ভাঙে আটা তৈরির সময় গ্রাম্যবধূরা গান গাইতে থাকেন। চারদিকে পড়ে যায় হৈ-চৈ। কালের বিবর্তণে ঢেঁকি এখন যেন শুধু ঐতিহ্যের স্মৃতি। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি আগের মত আর চোখে পড়ে না।

 

এক সময় ছিল ঢেঁকি গ্রাম জনপদে চাল ও চালের গুঁড়া-আটা তৈরির একমাত্র মাধ্যম। বধূরা কাজ করতো গভীর রাত থেকে ভোর সকাল পর্যন্ত। এখন ঢেঁকির সেই ধুপধাপ শব্দ আর শুনা যায় না। বর্তমানে আধুনিকতার ছোয়ায় ডুমুরিয়া উপজেলার ঢেঁকির শব্দ আর নেই। খুলনা জেলা’সহ উপজেলায় ঢেঁকির ব্যবহার কমে গেছে। ফলে বিলুপ্তির পথে গ্রামীণ জনপদের কাঠের তৈরি ঢেঁকি। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে যেখানে বিদ্যুৎ নেই সেখানেও ঢেঁকির ব্যবহার কমেছে। তবুও গ্রামীণ ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে কেউ কেউ বাড়িতে ঢেঁকি রাখলেও তারা ব্যবহার করছে না। তবে আবার কেউ কেউ দরিদ্র নারীদের দিন মজুরী দিয়ে ঢেঁকিতে ধান-চাল বা আটা তৈরি করতে দেখা গেছে। সেখানে একটু হলেও ধুপধাপ শব্দ শোনা গেছে। ঢেঁকি শিল্প হলেও এ শিল্পকে সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেই।

 

আপনার মূল্যবান ভোটটি দিয়ে শাহ আলম টিটো’কে জয়-যুক্ত করুন

 

একসময় ঢেঁকি শিল্পের বেশ কদর ছিল। যখন মানুষ ঢেঁকিতে ধান ও চাল ভেঙে চিড়া-আটা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো। তবে কৃষকের ঘরে এখন আর ঢেঁকি চোখে পড়ে না। তেল-বিদ্যুৎ চালিত মেশিন দিয়ে ধান ও চাল ভাঙার ফলে ঢেঁকি আজ বিলুপ্তির পথে। সে সময়ে কবি সাহিত্যিকগণ ঢেঁকিকে নিয়ে অনেক কবিতা ও গান লিখেছেন। আর ঢেঁকিছাঁটা আউশ চালের পান্তা ভাত পুষ্টিমান ও খেতে খুব স্বাদ লাগতো। বর্তমান প্রজন্ম সে স্বাদ থেকে বঞ্চিত। প্রাচীনকালে ঢেঁকির ব্যবহার বেশি হলেও বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে গ্রাম বাংলার ঢেঁকি আজ বিলুপ্তির পথে।

 

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার রানাই জামাল গ্রামের বাউল গায়ক জামাল বয়াতি জানান, ঢেঁকি কে নিয়ে বহু গান গেয়েছি। এখন ঢেঁকি নেই বহু গ্রামীণ গান আর গাওয়া হয় না। গোনালী গ্রামের নববধূ আসমা আকতার জানান, ধান ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে সে আটা’য় পিটা-পুলি ও পায়েশ তৈরি করে নতুন স্বামীকে খাওয়াবো কিন্তু কোথাও ঢেঁকির সন্ধ্যান পাচ্ছি না।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে গ্রাম বাংলায় ঢেঁকি’র ব্যবহার কমে গেছে। তবে ঢেঁকি আমাদের একটি প্রাচীন ঐতিহ্য। সেজন্য এ ঢেঁকি শিল্প রক্ষায় সংরক্ষণের জন্য সকলের সহযোগিতা ও গণ সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com