• শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:২৯
সর্বশেষ :
সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন উপলক্ষে কমিশন গঠন খুলনায় ইউনিয়ন পরিষদের রূপকল্প ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত ইসির প্রতীক তালিকায় যুক্ত হলো ‘শাপলা কলি’ ধুলিহর আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য নির্বাচিত বিএনপি’কে সতর্কবার্তা জামায়াতে’র শ্যামনগরে খাল উন্মুক্তের দাবীতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষের মানববন্ধন নারায়ণগঞ্জে জেলা পর্যায়ে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি শীর্ষক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত মহম্মদপুরে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার-বীজ বিতরণ ডুমুরিয়া উপজেলা সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির নিয়মিত সভা শ্যামনগরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় শিশুর মৃ’ত্যু

তালায় বাণিজ্যিকভাবে আঙ্গুরের সাথে ক্যাপসিকাম চাষ

মোঃ তাজমুল ইসলাম, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি / ১০০ দেখেছেন:
পাবলিশ: শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৫
বাণিজ্যিকভাবে আঙ্গুরের সাথে ক্যাপসিকাম চাষ

সাতক্ষীরা তালায় প্রথম বারের মতো বাণিজ্যিকভাবে আঙ্গুর চাষে সফল হয়েছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সুমন দাশ। ভারতের মহারাষ্ট্র এলাকার বøাক জাম্বু, সুপার মোনাকা, মানিকচমন ও বিএমডি জাতের আঙ্গুর চাষ করেছেন। আগামী অক্টোবর মাস থেকে আঙ্গুর বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন এই কৃষি উদ্যোক্তা।

এদিকে সাথে সাথী ফসল হিসেবে আঙ্গুরের সঙ্গে সাড়ে আট হাজার ক্যাপসিকাম চাষ করেছেন। তিনি জানান, ইতোমধ্যে ক্যাপসিকাম বাজারজাত করা শুরু করেছে। এক-দু’দিন অন্তর ৪০০ থেকে ৪৫০ কেজি পর্যন্ত ক্যাপসিকাম বিক্রি করছেন।

 

তালা উপজেলার বারাত মির্জাপুর গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা সুমন দাশ জানান, স্বাস্থ্য বিভাগে চাকরীর পাশাপাশি কৃষি নিয়ে কাছ করার ইচ্ছে অনেকদিনের। তবে তার চিন্তা ছিলো লাভজনক ফসল হিসেবে কি করা যায়! এরপর গত বছরের জুলাই মাসে ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন চার প্রকার ৪৫০ আঙ্গুরের চারা। এসব আঙ্গুরের চারার মধ্যে রয়েছে বøাকজাম্বু, সুপারমোনাকা, মানিকচমন ও বিএমডি। দুই বিঘা পরিমাণ জমিতে এই আঙ্গুর চারা রোপন করে সঙ্গে দিয়েছেন সাথী ফসল হিসেবে সাড়ে আট হাজার সিনজেন্টা ইন্দিরা গোল্ড জাতের
ক্যাপসিকাম চারা।

 

তিনি বলেন, গত এক মাস যাবত ক্যাপসিকাম বিক্রি করা শুরু করেছেন। এক দুই দিন পর পর ৪০০ থেকে ৪৫০ কেজি পর্যন্ত উত্তোলন করছেন। বাজারে প্রতি মন ৪ হাজার ৮০০ থেকে ৫হাজার টাকা পর্যন্ত দাম পাওয়া যাচ্ছে।

 

তিনি বলেন, দুই বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ করতে এ পর্যন্ত তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা হয়েছে। গাছে যে পরিমাণ ফলন দেখা যাচ্ছে তাতে করে ১৫ থেকে ১৬টন ক্যাপসিকাম চাষ উৎপাদন হতে পারে। তবে এখন বাজারে দামটা ভালো পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু কিছুদিন গেলে দাম কমে আসবে। তবে গড়ে প্রতি টন ৭০ হাজার টাকা দাম পাওয়া গেলেও অন্তত ১০লাখ টাকা ক্যাপসিকাম চাষ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন। তিনি বলেন, মাত্র ৫ থেকে সাড়ে ৫ মাসের এই ফসলটি উৎপাদন করে ৭ টাকার উপরে লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

এছাড়া আগামী অক্টোবর মাস থেকে আঙ্গুর বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি। সাড়ে চারশ’ আঙ্গুর চারা ভারত থেকে নিয়ে এসেছে রোপনসহ অন্যান্য বাবদ এপর্যন্ত ৯ লাখ টাকার উপরে খরচ হয়েছে বলে জানান সুমন দাশ। তবে বছরে দুই মৌসুমে আঙ্গুর বিক্রি করা যায়। এরমধ্যে ফেব্রুয়ারি ও অক্টোবর। তিনি বলেন, প্রথম বারে ৫০০ থেকে ৫৫০ কেজি আঙ্গুর উৎপাদন হতে পারে বলে ধারণা করছেন। এরপর থেকে প্রত্যেক মৌসুমে উৎপাদন বাড়তে থাকবে।

 

তিনি বলেন, একাধারে ২০ বছর পর্যন্ত ফলন দিতে পারে আঙ্গুর গাছে। প্রাপ্ত বয়স্ক একেকটি আঙ্ধসঢ়;গুর গাছ ৩০ থেকে ৪০ কেজি পর্যন্ত ফলন দেয় বছরে।

 

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, কৃষক সুমন দাশ আঙ্গুর ও ক্যাপসিকাম চাষ করে বেশ সফল হয়েছেন। ইতোমধ্যে তিনি ক্যাপসিকাম উত্তোলন করে বিক্রি শুরু করেছেন। পাশাপাশি আঙ্গুর গাছগুলোও ভালো বেড়েছে। আগামী ৭/৮ মাস পর তার আঙ্গুরও বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারনা করা হচ্ছে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকেও তাকে নানা ধরনের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, বাণিজ্যিকভাবে এই প্রথম আঙ্গুর চাষ শুরু করেছেন তালা উপজেলার বারাত গ্রামের কৃষক সুমন দাশ। তিনি সফল হলে সাতক্ষীরার কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা তৈরী হবে আঙ্গুর চাষে। তার দেখাদেখি অনেকেই চিন্তা ভাবনা করছেন আঙ্গুর চাষে। তবে সাতক্ষীরাতে আরও দুই তিন বছর আগে থেকে কিছু কিছু এলাকাতে বাণিজ্যিকভাবে ক্যাপসিকাম চাষ হচ্ছে। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ১৫ বিঘা পরিমান জমিতে ক্যাপসিকাম চাষ হয়েছে। তবে ফসলটি বেশ লাভজনক বলে জানান তিনি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট সাতক্ষীরা বিনেরপোতাস্থ কার্যালয়ের উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শিমুল মন্ডল জানান, বেলে দোআশ বা লালজাতীয় মাটিতে আঙ্গুর চাষ সম্ভব। তবে মাটির পিএইচ থাকতে হবে কম মাথায়। সেক্ষেত্রে ৪ এর কাছাকাছি হলে ভালো হয়। তবে প্রথম বাবের মত বাণিজ্যিকভাবে আঙ্গুর চাষ করে সফল হলে অব্যশই সাতক্ষীরার জন্য কৃষিতে নতুন সম্ভাবনা বয়ে আনবে।


এই বিভাগের আরো খবর

https://www.kaabait.com