
থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধি। ইচ্ছা সু-শিক্ষাই শিক্ষিত হয়ে সমাজে পিছিয়ে পড়া (প্রতিবন্ধি) সুবর্ণ নাগরিকদের কর্মদক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার। তারা যেন সমাজ ও পরিবারের বোঝা না হয়ে বরং উপার্জন সক্ষম ব্যক্তি হতে পারে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে নিজেকে একজন শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্নের কথা এভাবেই বলছিলেন সদ্য এসএসসি পরীক্ষায় বি গ্রেডে ২.৭৮ পয়েন্ট নিয়ে পাস করা লিয়ন কুমার দাস।
সে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানা এলাকার নগরঘাটা গ্রামের ঋষিপাড়ার স্বপন কুমার দাস ও জ্যোৎস্না রাণী দাস দম্পতির বড় ছেলে।
লিয়ন দাস বলেন, আমি নগরঘাটা কবি নজরুল বিদ্যাপীঠ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে বেগম খালেদা জিয়া কলেজে ভর্তি হয়েছি। অন্য শিক্ষার্থীদের মত আমি ডান হাতে লিখতে পারিনা। আমি বাম হাত দিয়ে লিখি। সব সময় আমার ভাত নড়াচড়া করে এজন্য হাতের লেখা খারাপ। এজন্য নাম্বার হয়তো কম পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, সরকারিভাবে প্রতিবন্ধি ভাতার অর্থ পায় কিন্তু সেটা আমার পড়াশোনার জন্য যথেষ্ট না।
তার মা জ্যোৎস্না রাণী দাস বলেন, আমার স্বামী একজন ভ্যান চালক। অভাবের সংসারে ৩ছেলেকে নিয়ে কোন রকমে দিন পার করছি। লিয়নের প্রবল ইচ্ছা থাকায় তাকে সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। ছেলের ইচ্ছা পূরণের চেষ্টা অব্যাহত রাখায় আশপাশের অনেক মানুষ কটু কথা বলে। এমন ছেলের ভবিষ্যৎ কি? এত লেখাপড়া করিয়ে কি হবে? আরো কত রকম কথা। সেসব কথায় কর্নপাত না করে স্বামী স্ত্রী দুজনই চেষ্টা করে যাচ্ছি ছেলের স্বপ্ন শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার। বাকিটা ইশ্বরের ইচ্ছা। পাশাপাশি ছেলের পড়াশোনার খরচ চালাতে সরকারি/বে-সরকারি সংস্থাসহ সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতা কামনা করছি।
এ বিষয়ে নগরঘাটা কবি নজরুল বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক সাইদুল আলম বাবলু বলেন, লিয়ন দাস আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন খুবই ভাল ছাত্র। আমরা শিক্ষকরা তাকে খুবই স্নেহ করি। সেও আমাদের যথেষ্ঠ সম্মান করে। তার অদম্য ইচ্ছাকে আমরা সম্মান জানাই। সে যেন সুশিক্ষাই শিক্ষিত হয়ে একজন আদর্শ্য শিক্ষক হতে পারে সেই দোয়া করি।
অন্তরবর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সকল কর্মকর্তা এ সকল সূবর্ণ শিক্ষার্থীদের দিকে লেখাপড়ার খরচ বহনে বিশেষ নজর দিবেন বলে সচেতন মহলের বিশ্বাস।