• শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৫৯
সর্বশেষ :
হাদিকে দেখতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন হাসনাত ওসমান হাদি ‘লাইফ সাপোর্টে’, গুলি এখনও বের করা যায়নি সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কে বাস উল্টে ইজিবাইকের ওপর—চালক নিহত, আহত অন্তত ১৪ ৩২ঘন্টা পর শিশু সাজিদকে জীবিত উদ্ধার শতাব্দীর কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের আগামীকাল থেকে মাঠে নামবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট না.গঞ্জে আন্তর্জাতিক লেখক দিবস উদযাপন উপলক্ষে রাইটার্স ক্লাবের প্রস্তুতিমূলক সভা পাটকেলঘাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি আব্দুল মোমিন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু ও শেষ কবে? দুই দিনেও ৯০ ফুট গভীর সরু গর্তে থেকে শিশু সাজিদকে উদ্ধার করা যায়নি

বিলুপ্তির পথে ডুমুরিয়ার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া, খুলনা প্রতিনিধি  / ২১৪ দেখেছেন:
পাবলিশ: রবিবার, ১২ মে, ২০২৪
বিলুপ্তির পথে ডুমুরিয়ার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার হাটবাজারে প্লাস্টিকসামগ্রীর বিভিন্ন ব্যবহারিক জিনিসপত্রের ভিড়ে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশের চিরচেনা মৃৎশিল্প। সেই সঙ্গে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম মাটির তৈরি বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজানো গ্রামীণ সংস্কৃতির নানা উপকরণাদি ও গৃহস্থালির নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান।

জানা গেছে, ডুমুরিয়ার পালপাড়া মৃৎশিল্প তৈরিকারক পরিবারগুলোর সদস্যদের মাঝে অভাব-অনটন এখন নৈমিত্তিক ব্যাপার। কারণ বাজারে তাদের তৈরি পণ্যের কদর নেই। তাই বদলে যাচ্ছে কুমারপাড়ার জীবনের চালচিত্র। ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ১২৬ ওয়ার্ড ও গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার এই পেশার সঙ্গে জড়িত।

 

সরজমিন দেখা গেছে, পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে মৃৎশিল্প প্রস্তুতকারী পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে মেলায় অংশগ্রহণের জন্য তৈরি করছে ছোট ছোট পুতুল ও মাটির খেলনা। পরিবারের নারী সদস্যরা রঙের কাজে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
এক সময় মৃৎশিল্পের খ্যাতি ছিল সারাদেশে। কিন্তু আজকাল অ্যালুমিনিয়াম, চীনা মাটি, মেলামাইন এবং বিশেষ করে সিলভারের হাঁড়ি-কড়াই প্রচুর উৎপাদন ও ব্যবহারের ফলে মৃৎশিল্প হারিয়ে যেতে বসেছে। কথিত আছে এ মৃৎশিল্প প্রায় দুই থেকে আড়াই শত বছর ধরে চলে আসছে। জানা যায় অতীতে এমন দিন ছিল যখন গ্রামের মানুষ এই মাটির হাঁড়ি-কড়াই, সরা, বাসন, মালসা ইত্যাদি দৈনন্দিন ব্যবহারের সমস্ত উপকরণ মাটির ব্যবহার করত। কিন্তু আজ বদলে যাওয়া পৃথিবীতে প্রায় সবই নতুন রূপ। নতুন সাজে আবার নতুনভাবে মানুষের কাছে ফিরে এসেছে। এখন গ্রামের মানুষের পাশাপাশি শহরের শিক্ষিত মানুষও মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করেন। তবে তা বিচিত্ররূপে।

এখন মানুষের রুচি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নিত্যনতুন রূপ দিয়ে মৃৎশিল্পকে আকর্ষণীয় করে তোলার চেষ্টা করছে। এক সময় খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা, রান্নাই, চেচুড়ি গ্রামে ছিল মাটির তৈরি পণ্যসামগ্রীর সমাহার। বিভিন্ন বাজারে ছিল মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিলসহ অন্যান্য সামগ্রীর দোকান। কিন্তু এখন আর কুমারদের তৈরি এসব পণ্য দেখা মেলে না।

 

ডুমুরিয়া, চুকনগর বাজারে পাতিল দোকান নামে কুমারদের একটি দোকান রয়েছে। এখানে দৃষ্টি নন্দন মাটির সামগ্রী কলসি, হাঁড়ি-পাতিল, সরা, মটকা, দৈ-পাতিল, মুচি ঘট, মুচি বাতি, মিষ্টির পাতিল, রসের হাঁড়ি, ফুলের টব, চাড়ার টব, জলকান্দা, মাটির ব্যাংক, ঘটি, খোঁড়া, বাটি, জালের চাকা, প্রতিমা, বাসন-কোসন, ব্যবহারিক জিনিসপত্র ও খেলনা সামগ্রী ইত্যাদি পাওয়া যায়। তারাও অস্তিত্বে টিকিয়ে রাখার জন্য লড়াই করে কোনোরকম নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে।

টিপনা নতুন রাস্তা বাজারের একমাত্র মৃৎশিল্প পণ্যের দোকানের বিক্রেতা জীবন পাল জানান, প্রায় ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তার এই ব্যবসা করে আসছি। টিপনা কুমাররা পেশা বদল করায় মাটির এসব পণ্যসামগ্রী বিভিন্ন জেলা থেকে সংগ্রহ করতে হয়। কিন্তু বর্তমানে প্লাস্টিক এবং সিলভারসামগ্রীর জনপ্রিয়তা বেড়ে যাওয়ায় তাদের ব্যবসায় ধস নেমেছে বলে জানান তিনি।

 

বাজারে প্লাস্টিকসামগ্রীর বিভিন্ন ব্যবহারিক জিনিসপত্রের ভিড়ে বিলুপ্ত হচ্ছে দেশের চিরচেনা মৃৎশিল্প। সেই সঙ্গে প্রায় হারিয়ে গেছে মাটির তৈরি বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজানো গ্রামীণ সংস্কৃতির নানা উপকরণাদি ও গৃহস্থালি নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান। জানা গেছে, ডুমুরিয়ার মৃৎশিল্প তৈরিকারক পরিবারগুলোর সদস্যদের মাঝে চলছে অভাব- অনটন। কারণ তাদের তৈরি পণ্য এখন বাজারে না চলায় বদলে যাচ্ছে কুমারপাড়ার জীবনের চালচিত্র।

খুলনার ডুমুরিয়া থানার বুড়লি গ্রামে এ পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। পূর্বপুরুষের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে মৃৎ শিল্প প্রস্তুতকারী পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে মেলায় অংশগ্রহণের জন্য তৈরি করছে ছোট ছোট পুতুল ও মাটির খেলনা। পরিবারের নারী সদস্যরা রঙের কাজে এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।


এই বিভাগের আরো খবর

https://www.kaabait.com