• মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:২১
সর্বশেষ :
দেবহাটা উপজেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মাসিক সভা ডুমুরিয়ায় গ্রীষ্মকালীন খেলাধুলার প্রস্তুতিমূলক সভা মানষিক ভারসাম্যহীন মফিজুল ৩দিন ধরে নি’খোঁ’জ! যুবদলনেতা শামীম হ’ত্যার ঘা’ত’ক স্ত্রী বৃষ্টি ও শালক গ্রেফতার তালা হাসপাতালে রোগী নেওয়ার নাম করে ভ্যান চু’রি ব্রিটিশ শাসনামল ১৮৬৭সালে প্রতিষ্ঠিত পৌরসভা আবারো ফিরে পাওয়ার দাবী কালিগঞ্জে ধুলিয়াপুর হাইস্কুলে দু’র্নী’তি প্রতিরোধ বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত আলোচিত-সমালোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি গ্রে’ফ’তা’র শ্যামনগরে নদীর চর দ’খ’ল করে গড়ে তোলা রিসোর্ট উচ্ছেদ করলো প্রশাসন আশাশুনিতে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের মূল্যায়ন ও সমাপনী

শ্যামনগরে হানি ট্রা’পার’ শহিদুলকে আইনের আওতায় আনার দাবি ভু’ক্তো’ভোগীদের

এস এম মিজানুর রহমান, শ্যামনগর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি / ৭১৮ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের হাওলভাঙ্গী গ্রামের শহিদুল ইসলামের ‘হানি ট্র্যাপে’র শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন অসংখ্য ব্যক্তি। আর্থিক ক্ষতির পর এখন তারা মারাত্বক সামাজিক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নিজের কব্জায় থাকা বিশেষ মুহুর্তের ভিডিও ছড়ানোর ভয় দেখিয়ে পুরণ করে চলেছেন অনার্য্য সব আবদার। তার অনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে মুখ খুললেই আবার হুমকি দেয়া হচ্ছে হয়রানীমুলক মামলায় জড়ানোর। বাধ্য হয়ে তাই আলোচিত এ শহিদুল ইসলামের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার আর্জি জানিয়েছে কয়েক ভুক্তোভোগী। তারা প্রতারক শহিদুলকে দ্রুত আইনের আওতায় নেয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষনসহ হাতিয়ে নেয়া অর্থ ফেরতের দাবি করেছে।

 

এমনকি শহিদুলের নির্দেশনায় ‘হানি ট্রাপ’ নাটকের পাশর্^ চরিত্রে অভিনয়কারী ‘শ’ আদ্যক্ষনেরর নারীও শহিদুলের কবল থেকে মুক্তিসহ জীবনের নিরাপত্তার আকুতি জানিয়েছেন।

 

 

আলোচিত এ ঘটনা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের হাওলভাঙী গ্রামের। ঘটনার মুল নায়ক একাধিক বিয়ের হোতা শহিদুল ইসলাম একই গ্রামের শমসের গাইনের দ্বিতীয় স্ত্রীর দ্বিতীয় সন্তান।

 

নওয়াবেঁকী বাজারের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী রবিউল ইসলামের ভাষ্য শহিদুল ও শাহানারা দম্পতি তার পুর্ব পরিচিত। ব্যবসায়িক লেনদেন সুত্রে শহিদুলের কাছে কিছু টাকা পাওনা হয় তার। একপর্যায়ে বকেয়া টাকা পরিশোধের কথা বলে শাহানারা প্রায় তিন মাস আগে তাকে নিজ বাড়িতে ডেকে নেয়।

 

রবিউলের অভিযোগ তিনি বাড়িতে প্রবেশের দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যে শহিদুল বাড়িতে পৌছে মুল ফটক আটকে দেয়। এসময় তাকে মারধরসহ ভিডিও ধারণের পাশাপাশি লোক জানাজানি না করার শর্তে নগদ ১০ হাজার টাকা আদায় করেন।

 

প্রায় অভিন্ন অভিযোগ ছোটভেটখালী গ্রামের আবুজার মোড়লের। তিনি জানান প্রায় ছয় মাস আগে হাওলভাঙী গ্রামের মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। এসময় আত্বীয়তার সুত্র ধরে একদিন দুপুরের আগে তিনি শাহানারা বেগমের বাড়িতে যায়। একপর্যায়ে তাকে বাড়ির উঠানে বসিয়ে রেখে শাহানারা ঘরে পানি আনতে যায়। এসময় আকস্মিকভাবে শহিদুল সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালের পাশাপাশি বেপরোয়া মারধর করে। এমনকি তার স্ত্রীর সাথে অনৈতিক কাজ করতে এসেছিল-এমন অপবাদ দিয়ে গ্রামে ঘুরানোর হুমকি দেয়। এসময় পাশে মেয়ের শ^শুরবাড়ি হওয়ায় লোকলজ্জার ভয়ে তিনি শহিদুলের পা ধরে নগদ এক লাখ তিরিশ হাজার টাকা দিয়ে সে যাত্রায় তিনি নিস্তার লাভ করেন।

 

আবুজার মোড়ল আরও জানান পরবর্তীতে তাকে ধরে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে শহিদুল বিভিন্ন সময়ে আরও প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকা আদায় করা হয়।

 

তবে শুধু এ দু’জন না, বরং নওয়াবেঁকীর আসলাম, আশরাফসহ আরও অসংখ্য ব্যক্তি প্রতারক শহিদুলের ‘হানি ট্রাপে’র শিকার হওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। তাদের দাবি শহিদুল একজন চিহ্নিত প্রতারক। অসংখ্য বিয়ের হোতা শহিদুল কয়েক বছর আগে শাহানারা নামের এক নারীকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে স্বামী-স্ত্রী মিলে ‘হানি ট্রাপ’ এর ব্যবসা খুলে বসেন। এসব ভুক্তোভোগীর অভিযোগ নানা কৌশলে তারা বাড়িতে ‘শিকার’ ডেকে নেয়। একপর্যায়ে ‘শিকার’ বাড়ির মধ্যে ঢুকলেই শহিদুল সেখানে উপস্থিত হয়ে ভিডিও ধারণসহ লোকজন জানাজানির পাশাপাশি থানা পুলিশ করার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। স্থানীয় বিএনপির প্রভাবশালী এক নেতার আশির্বাদপুষ্ট হওয়ায় কোন ভুক্তোভোগী শহিদুলের টিকি পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারে না বলেও তাদের অভিযোগ।

 

শহিদুলের বিরুদ্ধে ভুক্তোভোগীদের আনীত অভিযোগ স্বীকার করেন তার স্ত্রী দাবি করা শাহানারা বেগম। তিনি জানান স্বামী পরিত্যক্তা হওয়ার কারনে প্রেমের জালে ফুসলিয়ে ২০১৯ সালে শহিদুল নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে তাকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে শহিদুলের আরও নারী আসক্তির বিষয় জানতে পারায় পারিবারিক কলহ মারাত্বক আকার ধারণ করলে তাকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। পরবর্তীতে শহিদুল অনেকটা চাপের মুখে তার ‘হানি ট্রাপ’ ব্যবসায় সহযোগীতা করতে বাধ্য করেন।

 

শাহানারা অভিযোগ করেন শহিদুল তাকে ব্যবহার করে অন্তত ১০ জনকে ‘হানি ট্রাপ’ এ ফেলে সর্বশান্ত করেছে। প্রতিবারই তিনি ‘শিকার’ আটকের পর ভিডিও ধারণ করে নিজের কাছে সংরক্ষিত রাখতেন। শহিদুলের আরও একটি সংসার থাকায় এমন অপকর্ম থেকে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সেখানে দ্বিতল বাড়ি নির্শান করেছেন।

 

শাহানারা আরও অভিযোগ করেছেন মাঝেমধ্যে শহিদুলের এমন অনৈতিক প্রস্তাবে সম্মত না হলে তাকে বেপরোয়াভাবে মারধর করা হতো। একপর্যায়ে তার পা ভেঙে দেয়ার দাবি করে শাহানারা জানান এখন মুখ খোলার কারনে শহিদুল তাকে প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছে। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের দিয়ে কর্মস্থল থেকে তাকে ছাড়াইয়ের চ্রকান্তও করছেন। তিনি ‘হানি ট্রাপ’ কান্ডের হোতা শহিদুলের কবল থেকে মুক্তির পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনেরও দাবি জানান।

 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল ইসলাম বলেন, শাহানারা একজন খারাপ নারী। তার সাথে বিয়ের কথা অস্বীকার করে তিনি আরও দাবি করেন, পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় মাঝেমধ্যে শাহানারার বাড়িতে অসৎ উদ্দেশ্যে কোন পুরুষের আগমন ঘটলে তিনি এগিয়ে যেতেন।

 

থানা-পুলিশে সোপর্দ না করে নিজে ভিডিও ধারণসহ অর্থ আদায় করে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি সালিশ বৈঠক করে ছেড়ে দিতেন। তবে টাকা গ্রহনের অভিযোগ অস্বীকার করেন। উক্ত নারী তার সম্মানহানী করছেন দাবি করে তিনি মামলা করারও হুমকি দেন।


এই বিভাগের আরো খবর

https://www.kaabait.com