• সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ০২:২৮
সর্বশেষ :
প্রচার মাইকের যন্ত্রণা, অটোরিকশাসহ যানবাহনের হর্ণের বিকট শব্দে নাকাল ডুমুরিয়া তালায় ফসল, মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ খাতের সফল উদ্যোক্তাদের মাঝে সম্মাননা প্রদান তালা-কলারোয়ার সিংহভাগ উন্নয়ন বিএনপির আমলেই হয়েছে : হাবিবুল ইসলাম শ্যামনগরে প্রতিবন্ধীর জায়গা দ খ লের অপচেষ্টা, মা ম লা দেবহাটায় ডাঃ শহিদুল আলমের ৩১দফা বাস্তবায়নে প্রচারনা শুরু মণিরামপুরের যমযমিয়া দাখিল মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তোপের মুখে সুপার খেশরায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ বিএনপি মাটি ও মানুষের দল, নেতা নির্ভর দল নয়- নিতাই রায় চৌধুরী বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে: ডা. শহিদুল আলম তালায় সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলামের অংশগ্রহণে জগন্নাথ রথযাত্রা অনুষ্ঠিত

মনের প্রশান্তি দিতে ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন দেবহাটার রূপসী ম্যানগ্রোভ থেকে

কে এম রেজাউল করিম, দেবহাটা, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি / ১৮৪ দেখেছেন:
পাবলিশ: রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৫

সাতক্ষীরার দেবহাটা রূপসী ম্যানগ্রোভ দর্শানার্থীদের বিনোদন নিশ্চিত করতে নানা প্রস্তুতি চলছে রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রে। ইছামতির কোল ঘেঁষে যেন একটি আজব চিড়িয়াখানা।

 

উপজেলার সদর থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভারত সীমান ইছামতি কোল ঘেঁষে। মিনি সুন্দরবন নামে অবশিষ্ট, আর এমনি সুন্দরবন অর্থাৎ ম্যানগ্রফে মধ্যে হরেক রকমের হাঁস, মুরগী, খরগোশ, বানর, পাখি ও কেওড়া গোল গাছ-গাছালী ও ইছামতি নদী ভ্রমণেন জন্য আছে নৌকা,স্থলে বেড়ানোর জন্য আছে ঘোড়া,বাচ্চাদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য ট্রেন,বাচ্চাদের দেখার জন্য আছে বিভিন্ন কাটুন বা ফেস্টুন, ফুলের বাগানে ভর্তি এক আজব চিড়িয়াখানাটি ও মিনি সুন্দরবন দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছে আবাল-বৃদ্ধ- বনিতা। আছে গেস্ট হাউস,মুসলিমদের জন্য আছে নামাজের জায়গা দিন অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে লোকজনের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে।

 

পশু-পাখির খামার বানিয়েছেন এর অনেক আগে থেকে। বিভিন্ন জাতের কবুতর, লাভ বার্ড, কোকাটেল, পাজেরিকা, টিয়া, কালিম পাখি, তোতামুখি,ইমু পাখিসহ বহু পাখির আছে।

 

এ বিভিন্ন জাতের ফুল দ্বারা পরিবেষ্ঠিত সুন্দরবনটি সরেজমিনে চিড়িয়াখানাটি দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে সকলের। সাতক্ষীরা দেবহাটা উপজেলার ইছামতি নদীর তীরে সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলা পর্যটন কেন্দ্রটি ১৫০ বিঘা জমিতে বিস্তৃর্ণ। এই বনের বুক চিরে প্রায় ১০ একর জমিতে অনামিকা লেক, পিকনিক স্পট, শিশুপার্ক, কনফারেন্স রুম, বনের ভিতরে পাকা ট্রেইল, সেলফি পয়েন্ট, প্যাডেল চালিত বোড, ইছমিতির পাড়ে বসে বৈকালিন, তিন নদীর মোহনা দেখার সুব্যবস্থা।

 

এছাড়া নারী-পুরুষের জন্য আলাদা নামাজের স্থান, সুপেও পানির ব্যবস্থা ছাড়াও নতুন ভাবে যোগ হচ্ছে রাত্রিযাপনের জন্য কটেজ। নানামূখি বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি করা বনটিতে বর্তমানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

 

জেলার সদর হতে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে ইছামতি নদীর তীরে শিবনগর মৌজায় অবস্থিত এ বনটি। এটি উপজেলার “রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্র” নামে পরিচিত। ইছামতি নদীর তীরে কৃত্রিমভাবে সৃষ্টি এ ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি এ উপজেলায় মানুষকে গর্বিত করে।

 

উপজেলা প্রশাসনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় টাউনশ্রীপুর এলাকায় ভারতের টাকী পৌরসভার বিপরীতে ইছামতি নদীর তীরে শীবনগর মৌজায় এ বনটি তৈরী করা হয়েছে। এই পর্যটন কেন্দ্রর সার্বিক উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সহযোগীতা প্রদান করা হয়েছে। এই বনটিতে বহু প্রজাতির ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রয়েছে।

 

সুন্দরবনের আদলে বিভিন্ন প্রজাতির বনজ বৃক্ষের চারা এনে রোপন করে ব্যাপক বনের সৃষ্টি করা হয়েছে। যার মধ্যে কেওড়া, বাইন, গোলপাতা, কাঁকড়া, নিম, সুন্দরী, হরকচাসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ উদ্ভিদ। বিনোদন প্রিয়াসীদের জন্য রয়েছে বসারস্থান। শিশুদের আনন্দ দেওয়ার জন্য কৃত্রিম বিভিন্ন প্রজাতীর পশুপাখি। স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে এটি পরিপূর্ণ বনে পরিনত করতে উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।

 

এদিকে, সাতক্ষীরা জেলার ইছামতি সীমান্তের ইছামতির তীরে গড়ে ওঠা দৃষ্টিনন্দিত মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য ম্যানগ্রোভ মিনি সুন্দরবনটির পরপর পরিধি বাড়ছে। ২০০৯ সালে দেবহাটার সুঁশিলগাতী এলাকার নদীর বেড়িবাধ ভেঙ্গে প্লাবিত হলে বাধ রক্ষায় ২০১০ সালে উপজেলার প্রশাসনের উদ্যোগে বাধ রক্ষায় ও প্রাকৃতিক ভারসম্য রক্ষার জন্য তৈরী করা হয় ম্যানগ্রোভ বন। বেশ কয়েক বছর যেতে যেতে বনের আকার বৃদ্ধি পেতে থাকে। আর রক্ষা পায় আশে পাশের এলাকাবাসীরা। প্রতিবছরে উপজেলার ও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ উপভোগ করতে আসে প্রকৃতির এই দৃর্শ্য। তাছাড়া বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বনটিতে কানায় কানায় দর্শণার্থী পরিপূর্ণ হয়।

 

তাছাড়া শীতের প্রথম থেকে শুরু হয় পিকনিক উৎসব। অনেকে এসে রান্নাবান্না করে ধুমধাম চড়–ই ভাতিও করে। কয়েক মাস ধরে চলতে থাকে উৎসবের আমেজ। সেই আমেজ ছড়িয়ে পড়ে সকলের মাঝে। বর্তমান স্থানটিতে প্রবেশ করতে হলে উপজেলা প্রশাসনেকে টিকিটের মাধ্যমে ফি দিতে হয়। যার পুরো টাকা সরকারি রাজস্ব তহবিলে জমা হয়। স্থানটি ইছামতির তীরে নিরিবিলি হওয়ায় বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ এখানে সময় কাটাতে আসেন।

 

ঘুরতে আসা দর্শানার্থীরা জানান, বনটি ইছামতি নদীর পাড়ে হওয়ায় সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। এপাশে বাংলাদেশ অপরপাশে ভারত মাঝ খানে নদী। জায়গাটি অত্যান্ত নিরিবিলি হওয়ায় সব বয়সী মানুষের কাছে প্রিয়। তাছাড়া বিভিন্ন দিবস বা ছুটির দিনে বেশি দুরে যা যেয়ে দেবহাটায় এসে সুন্দরবনের স্বাদ পায়। নারী ও শিশুদের জন্য স্থানটি খুবই নিরাপদ বলেও দাবি দর্শানার্থীদের।

 

এই স্পটটিতে প্রতিদিন প্রায় হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া ছুটি ও বিভিন্ন উৎসব ঘিরে দিনে ৩/৪ হাজার দর্শানার্থীদের পদাচরন ঘটে এই বিনোদন কেন্দ্রে। বর্তমানে পর্যটন কেন্দ্রে দায়িত্বে ম্যানেজার সোহেল বলেন, বিনোদন কেন্দ্রে এসে যাতে কেউ কোন প্রকার হয়রানি না হয় সেব্যাপারে আমাদের স্টাফরা নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা দর্শানার্থীদের বিনোদনের জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি করছি।

 

এদিকে নানা উদ্যোগ আর আশার কথা জানিয়ে দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আসাদুজ্জামান বলেন, প্যারা সাইডে লোহার হাতল লাগানো, ইছামতি নদীর ধারে বসার জায়গা, শিশু পার্কের ভিতরে এবং বাইরে রাইড সংযুক্ত করা হয়েছে, রাস্তা প্রশস্ত করা হয়েছে, থ্রি ফেজের বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দেওয়া হয়েছে, ভিতরের রাস্তার কার্পেটিং এর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে পরে বড় গাড়ি গুলো ঢুকতে কোন অসুবিধা হবে না।

 

যেহেতু আমার সুন্দরবনের কাছাকাছি অবস্থান করি। সেকারনে রাজধানী সহ দেশ-বিদেশী পর্যটক সুন্দর ভ্রমনে আসেন। তাদের কথা বিবেচনা করে রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি দর্শানার্থীদের মত করে সাজানো হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকে পর্যটন কেন্দ্রের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। আমি অনুরোধ করব যারা শীতের ছুটিতে বাড়িতে ফিরবেন অর্ন্তত একবার হলেও দেবহাটা রূপসী ম্যানগ্রোভ পর্যটন কেন্দ্রটি ঘুরে যাবেন।


এই বিভাগের আরো খবর

https://www.kaabait.com