• শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১১:৩৯
সর্বশেষ :
শ্যামনগরে প্রতিবন্ধীর জায়গা দ খ লের অপচেষ্টা, মা ম লা দেবহাটায় ডাঃ শহিদুল আলমের ৩১দফা বাস্তবায়নে প্রচারনা শুরু মণিরামপুরের যমযমিয়া দাখিল মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি মনোনয়নকে কেন্দ্র করে তোপের মুখে সুপার খেশরায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ বিএনপি মাটি ও মানুষের দল, নেতা নির্ভর দল নয়- নিতাই রায় চৌধুরী বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে: ডা. শহিদুল আলম তালায় সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলামের অংশগ্রহণে জগন্নাথ রথযাত্রা অনুষ্ঠিত কালিগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালতে অবৈধ ইটের পাঁজায় ২০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডোপ টেস্ট করা হবে–জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালা

সান্তাহার সাইলোর তাল বিক্রির অর্থ হরিলুটের অভিযোগ!

বগুড়া সংবাদদাতা / ১৩৩ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
সাইলোর তাল বিক্রির অর্থ হরিলুটের অভিযোগ 

বগুড়া জেলার আদমদিঘী উপজেলা সান্তাহারে অবস্থিত উত্তরবঙ্গের মধ্যে একটি মাত্র সাইলো। প্রায় বিশ বিঘা জমির উপর অবস্থিত সাইলোতে প্রথমে গম সংরক্ষণ করা হতো এবং পরে চাল সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাইলোর ভিতরে ও বাহিরে প্রায় শতাধিক তাল গাছ রয়েছে। যে তাল গাছ থেকে প্রতিবছর তাল ও তাল শাঁস বিক্রি করে লক্ষাধিক টাকা আয় হয়।
নিয়মানুসারে এই তাল বিক্রির অর্থ সরকারের রাজস্ব খাতে যোগ হওয়ার নিয়ম থাকলেও গত কয়েক বছর যাবত তাল বিক্রির টাকা যাচ্ছে বর্তমান সাইলোর ভারপ্রাপ্ত সুপার ও তার গড়ে তোলা সিন্ডিকেটের পকেটে। সুপারের লাগামহীন অনিয়ম আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই অন্যায় ভাবে ভয়ভীতি আর হয়রানীর শিকার হতে হয় প্রতিবাদকারীদের। আর সুপারের মুখপাত্র হিসেবে সাইলোর যে কোন বিষয়ে মাতবরী করে আসছেন ড্রাইভার খোকন এমনই অভিযোগ পাওয়া গেছে সাইলোর অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে।
সাইলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শাখার কর্মচারী সুমন হোসেনসহ অনেকেই জানায় চলতি বছরেও সাইলোর তালগাছগুলো থেকে গোপনে প্রায় লক্ষাধিক টাকার তাল ও তাল শাঁস বিক্রি করা হয়েছে। সুপারের সকল অপকর্মের সহযোগিতাকারী হিসেবে ইতিমধ্যেই পরিচিতি লাভ করেছে ড্রাইভার খোকন।
ড্রাইভার খোকনের মাধ্যমেই তালগুলো সাইলো থেকে ট্রাকে ভর্তি করে বাহিরে বিক্রি করা হয়েছে। অথচ বিগত সময়ে যারা সাইলোর ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্বে ছিলেন তারা সাইলোর ভিতরে থাকা গাছ থেকে উৎপাদিত সকল ফল সাইলোর ভিতরে থাকা সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাঝে বন্টন করতেন। এরপর উদ্বৃত্ত পণ্য নিয়মানুসারে বাহিরে বিক্রি করে তা সরকারের রাজস্ব খাতায় জমা দেয়া হতো। কিন্তু এই বর্তমান সুপার একচ্ছত্রভাবে নিজের বাহিনীর মাধ্যমে সাইলোর সবকিছু হরিলুট করে খাচ্ছেন মনে সাইলো সুপারের বাপ-দাদার নিজস্ব সম্পত্তি। সরকারি সম্পদ তিনি অবৈধ ভাবে কতিপয় লুটপাটকারী বাহিনীর মাধ্যমে নিজের ইচ্ছে মাফিক ব্যবহার করে আসছেন।
ড্রাইভার আসাদুজ্জামান খোকন মোবাইল ফোনে জানান তার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ তাকে যা বলেন তিনি তাই করেন। তিনি তার স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক তাল ট্রাকে করে যেখানে তার স্যার পাঠাতে বলেছেন সেখানে তিনি পাঠিয়েছেন। তবে কত টাকার তাল বিক্রি হয়েছে কিভাবে বিক্রি হয়েছে তিনি সেই সব কিছুই জানেন না। তার স্যার তাকে যা করতে বলেন তিনি তাই করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইলোর এক কর্মচারী জানান, সাইলো অধীক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শাহরিয়ার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী সান্তাহারে গত ২০২২সালের নভেম্বর মাসের ১৭তারিখে যোগদানের পর থেকে পুরো সাইলোকে তিনি নিজের বাপ-দাদার সম্পত্তি মনে করে আসছেন। তিনি সাবেক মন্ত্রী হাছান মাহমুদের এলাকার সন্তান বলে কোন নিয়মকে তোয়াক্কা করেন না। তার ৩৩বছরের চাকরী জীবনে এই রকম দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা তিনি কখনোও দেখেননি। তিনি সব সময় আত্মঅহংকার নিয়ে থাকেন। কোনো কর্মচারিকে তিনি মূল্যায়ন করেন না। আর যারা মাস্টার রোলে চাকরি করছেন, তাদের কথা বাদই দিলাম।
এই বিষয়ে সাইলো অধীক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শাহরিয়ার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরীর মোবাইল ফোনে (০১৮২১৩৩৬১০?) একাধিকবার ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা: রোমানা আফরোজ মোবাইল ফোনে জানান সাইলো সুপারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পেলেই তিনি তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়ে দিবেন। তবে সাইলো সুপার সাংবাদিকদের সঙ্গে যে অশালীন ব্যবহার করেছেন তা সত্যিই দু:খ্যজনক। সাংবাদিকদের সঙ্গে একজন কর্মকর্তার এমন খারাপ ব্যবহার একদম করা উচিত হয়নি।
রাজশাহী বিভাগের সহকারী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো: জাহেদুল ইসলাম মোবাইল ফোনে জানান যেহেতু সাইলোর বিষয়টি সরাসরি অধিদপ্তর দেখভাল করে সেহেতু অধিদপ্তরকে অভিযোগগুলো জানালে অধিপ্তরই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আর অধিদপ্তর থেকে আমাদেরকে যে নির্দেশনা প্রদান করবে আমরা সেই মোতাবেক কাজ করবো। উল্লেখ্য, বর্তমান সাইলো অধীক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শাহরিয়ার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম সাইলোতে রক্ষন প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন।


এই বিভাগের আরো খবর

https://www.kaabait.com