ডুমুরিয়ার পানি ফল এখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে পানি ফলের চাষ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি সিংড়া নামেও পরিচিত এ ফলের লাভজনকতা দেখে স্থানীয় চাষিরা এদিকে ঝুঁকছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, ডুমুরিয়ার আশপাশের খাল, বিল ও জলাশয়ে এখন ব্যাপকভাবে পানি ফলের চাষ হচ্ছে। পানিতে ভাসমান লতার মতো গাছে ফল ধরে বলে এটি পানি ফল বা পানি সিংড়া নামে পরিচিত। মৌসুমি এ ফল অনেক চাষি মাছের সঙ্গে মিশ্রভাবে চাষ করেন। এতে অতিরিক্ত খরচ বা শ্রম লাগে না। ফলটিতে প্রচুর পানি ও খনিজ উপাদান থাকায় বাজারে এর চাহিদা সারা মৌসুমেই স্থির থাকে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পতিত খালবিল ও জলাশয়ে পানি ফল চাষ করে কৃষকেরা ভালো লাভ পাচ্ছেন। এ কারণে উপজেলায় প্রতিবছর চাষের পরিমাণ বাড়ছে। বাজারে চাহিদা বৃদ্ধির ফলে হাটবাজারেও বিক্রি বেড়েছে, যা স্থানীয় বেকারদের কর্মসংস্থান তৈরি করছে।
উপজেলার ডাকাতিয়া খাল এলাকায় এখন সারি সারি পানি ফলের সবুজ গাছ দেখা যায়। কাঁচা ও সিদ্ধ—দুইভাবেই বাজারে বিক্রি হয় এই ফল। শহর থেকে গ্রাম—সব জায়গায়ই এর চাহিদা বাড়ছে।
খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আষাঢ় থেকে ভাদ্র বা আশ্বিন পর্যন্ত পানি ফলের চারা রোপণ করা হয়। রোপণের দুই থেকে আড়াই মাস পর ফল সংগ্রহ শুরু হয়। একটি গাছ থেকে তিন–চারবার ফল তোলা যায় এবং পৌষ মাস পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। পানি ফলে বীজ না থাকায় মৌসুম শেষে পরিপক্ব ফল থেকেই পরবর্তী মৌসুমের চারা তৈরি হয়। কৃষি বিভাগ আশা করছে, আগামী বছর আরও বেশি জলাশয়ে এ ফলের চাষ বাড়বে।
গুটুদিয়া ইউনিয়নের লতা গ্রামের কৃষক দীপঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘এ বছর সাড়ে সাত বিঘা জমিতে পানি ফল চাষ করেছি। খরচ খুবই কম। আশা করছি খরচের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ লাভ হবে।’
চুকনগর বাজারের ফল ব্যবসায়ী হযরত আলী মোল্লা বলেন, ‘আশ্বিন থেকে পৌষ পর্যন্ত একটানা এই ফল বিক্রি করা যায়। প্রতিদিন প্রায় এক মন ফল বিক্রি করি, এতে ৫০০–৬০০ টাকা লাভ থাকে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, ‘পানি ফল খুবই সুস্বাদু। ডুমুরিয়া থেকে পানি ফল ও এর চারা দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। আগামী বছর এ উপজেলায় পানি ফলের চাষ আরও বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।
https://www.kaabait.com