• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৮

তানজিম আবাহনীর নায়ক

প্রতিনিধি: / ২৩ দেখেছেন:
পাবলিশ: শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪

স্পোর্টস: নতুন বলে জোড়া ধাক্কা দিলেন শরিফুল ইসলাম। একটু পর উইকেট শিকারে যোগ দিলেন তানজিম হাসান। পরে তিনিই হয়ে উঠলেন মূল নায়ক। বিধ্বংসী বোলিংয়ে নামালেন ধস। আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ পিছিয়ে থাকবেন কেন! ত্রিমুখি পেস আক্রমণে ত্রাহি অবস্থায় পড়ে গেল রূপগঞ্জের ইনিংস। ছোট রান তাড়ায় ঝড়ো ইনিংস খেলে আবাহনীকে সহজ জয় এনে দিলেন মোসাদ্দেক হোসেন। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে শনিবার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে স্রেফ ২৩ রানে ৫ উইকেট নেন তানজিম। বাকি ৫টি ভাগাভাগি করেন শরিফুল ও তাসকিন। জাতীয় দলের তিন পেসারের তোপের পর মোসাদ্দেকের ক্যামিওতে ১০০ ওভারের ম্যাচ শেষ হয়ে যায় ৪০ ওভারের আগেই। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচটিতে ৮ উইকেটে জেতে আবাহনী লিমিটেড। লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৯৯ রানে গুটিয়ে দিয়ে স্রেফ ১০.৪ ওভারে ছুঁয়ে ফেলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। জাতীয় দলের ব্যস্ততা শেষের পর প্রিমিয়ার লিগে নিজের প্রথম তিন ম্যাচ মিলিয়ে ৫ উইকেট নেন তানজিম। এবার এক ম্যাচেই নিলেন ৫টি। ৪৮ ম্যাচের লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় ৫ উইকেট। ২০২২ সালের লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ৫৫ রানে ৫ উইকেট নেন তরুণ পেসার। দারুণ ছন্দে থাকা শরিফুল ২৯ রানে নেন ৩ উইকেট। ৮ ওভারে ৪ মেইডেনসহ ১৬ রানে ২ শিকার ধরেন তাসকিন। ২৮.৩ ওভারে ৯৯ রানে অল আউট হয় রূপগঞ্জ। সবুজ ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে টস জিতে রূপগঞ্জকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আবাহনী। সা¤প্রতিক সময়ে যে ডেলিভারিতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন শরিফুল, সেটির কার্যকর ব্যবহার এখানেও দেখান প্রথম ওভারে। ভেতরে ঢোকানো ডেলিভারিতে এলবিডবিøউ করে দেন ডানহাতি তৌফিক খানকে। শরিফুলের পরের ওভারে ফেরেন বাঁহাতি সাদমান ইসলাম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ বাইরে বসে কাটানো ওপেনার রানের খাতা খুলতে পারেননি। ওই ওভারে শরিফুলের বাউন্সারে মাথায় আঘাত পান টেস্ট সিরিজ শেষ করে রূপগঞ্জে যোগ দেওয়া মুমিনুল হক। ব্যথায় মাঠ ছেড়ে যান অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। বেশিক্ষণ অবশ্য তিনি মাঠের বাইরে থাকতে পারেননি। আরও ৩ উইকেট পড়ার পর ফের ব্যাটিংয়ে নামেন মুমিনুল। সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন তানজিম। নিজের দ্বিতীয় ওভারে মাহমুদুল হাসান জয়ের দারুণ ক্যাচে ইমরানউজ্জামানকে ফেরান ২১ বছর বয়সী পেসার। তার পরের ওভারে এলবিডবিøউ হন আমিনুল ইসলাম। এরপর শামীম হোসেনকে নিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। একপ্রান্ত আগলে স্রেফ উইকেটে পগে থাকেন মাশরাফি। শামীম খেলেন নিজের মতোই। তানজিমের পরপর দুই বলে বাউন্ডারি মারেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। পরে নাহিদুল ইসলামের ওভারেও মারেন দুটি চার। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে তাকে ফেরান শরিফুল। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন এনামুল হক। ৪ চারে ১৪ বলে ১৮ রান করেন শামীম। তার এই রানই দলের সর্বোচ্চ! পুনরায় ব্যাটিংয়ে নেমে শরিফুলের বলে পরপর দুটি চার মারেন মুমিনুল। তবে তিনিও পারেননি উইকেটে টিকতে। তানজিমের গতিময় ডেলিভারিতে বোল্ড হন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। একই ওভারে কোনো রান না দিয়ে শুভাগত হোমের উইকেটও নেন তানজিম। তখনও একপ্রান্তে টিকে ছিলেন মাশরাফি। ৯ নম্বরে নেমে তাকে সঙ্গ দেন শহিদুল ইসলাম। দুজন মিলে গড়েন ইনিংসের সর্বোচ্চ ২৭ রানের জুটি। ২৮তম ওভারে মাশরাফিকে বোল্ড করেন তাসকিন। একটি ছক্কার পরও ৬০ বলে ১৫ রান করেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। পরের বলেই আব্দুল হালিমকে ফেরান তাসকিন। পরের ওভারে তানজিমের বলে পুল করতে গিয়ে মিড অনে ক্যাচ দেন শহিদুল। ৫ উইকেট পূর্ণ হয় তরুণ পেসারের। কোনো রান যোগ না করেই শেষ ৩ উইকেট হারায় রূপগঞ্জ। ছোট লক্ষ্যে শুরুটা ভালো হয়নি আবাহনীর। দ্বিতীয় ওভারে ড্রেসিং রুমে ফেরেন মোহাম্মদ নাইম শেখ। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়ও। এতে অবশ্য তেমন কোনো সমস্যা হয়নি চ্যাম্পিয়নদের। তৃতীয় উইকেটে স্রেফ ৩৫ বলে ৭২ রানের অবিছিন্ন জুটি গড়েন মোসাদ্দেক ও এনামুল হক। ৫ চারের সঙ্গে ৪ ছক্কায় ১৮ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক মোসাদ্দেক। ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৩৪ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন এনামুল। ঈদ-উল-ফিতরের বিরতির আগে এটিই দুই দলের শেষ ম্যাচ। ৯ ম্যাচের সবকটি জিতে পয়েন্ট টেবিলের এক নম্বরে আবাহনী। সমান ম্যাচে চতুর্থ পরাজয়ে সাত নম্বরে নেমে গেছে রূপগঞ্জ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ২৮.৩ ওভারে ৯৯ (তৌফিক ২, সাদমান ০, ইমরানউজ্জমান ১৫, মুমিনুল ৯, আমিনুল ১১, মাশরাফি ১৫, শামীম ১৮, শুভাগত ০, শহিদুল ১৭, হালিম ০, আল আমিন ০*; শরিফুল ৬-১-২৯-৩, তাসকিন ৮-৪-১৬-২, তানজিম ৭.৩-১-২৩-৫, নাহিদুল ৪-২-১২-০, তানভির ৩-০-১৯-০)
আবাহনী লিমিটেড: ১০.৪ ওভারে ১০১/২ (এনামুল ৩৭*, নাঈম ৪, হৃদয় ১০, মোসাদ্দেক ৪৮*; আল আমিন ৫-১-৩৫-১, হালিম ৩-০-২৬-১, শহিদুল ২-০-৩১-০, সাদমান ০.৪-০-৭-০)
ফল: আবাহনী লিমিটেড ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: তানজিম হাসান


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com