সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায় এই শ্লোগান সামনে রেখে শনিবার ১ নভেম্বর,সকাল ১০টায় ডুমুরিয়া উপজেলা প্রশাসনিক ভবন দ্বিয়তলা সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা জনতা বহুমুখি সমবায় সমিতির অধ্যক্ষ গোলাম আব্দুল কুদ্দুস, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ আল আমিন, স্বাগতম বক্তব্য দেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা সরদার জাহিদুর রহমান, বক্তব্য দেন উপজেলা সমবায় সহকারী পরিদর্শক মোঃ হেকমত আলী, ডুমুরিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া উপজেলা ব্যাবস্থাপনা কমিটির সদস্য,কুলবাড়িয়া চিংড়ি চাষী পানি ব্যবস্থাপনা বহুমুখী সমবায় সমিতির কৃষ্ণপদ জর্দ্দার, জনতা আদর্শ গ্রাম উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি অশোক কুমার মন্ডল, মাধবকাটি সমবায় সমিতির সভাপতি দিপংকর মন্ডল, উপজেলা ডুমুরিয়া মডেল মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল মালেক, মৃনাল গাইন, প্রমুখ।
উল্লেখ্য গ্রামীণ অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়নে সমবায়ের গর্ব করার মত সুদীর্ঘকালের ঐতিহ্য এবং ইতিহাস রয়েছে।
উনবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে সর্বপ্রথম ইংল্যান্ডে সমবায় আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়। প্রকৃতপক্ষে, আধুনিক সমবায় আন্দোলনের জয়যাত্রা শুরু হয় ১৮৪৪ সালে ইংল্যান্ডের ম্যানচেষ্টারের নিকটবর্তী রচডেল (Rochdale) নামক একটি ছোট্ট শহরে। রচডেলের মাত্র ২৮ (আটাশ) জন শ্রমিক আত্ম-প্রত্যয় ও আত্ম-প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হওয়ার ব্রত নিয়ে প্রতিষ্ঠা করে ‘রচডেল অগ্রণীদের সমভাবাদী সমবায় সমিতি। ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম সমবায় কার্যক্রম শুরু হয় ১৯০৪ সালে তদানীন্তন ব্রিটিশ ভারতের গভর্নর জেনারেল লর্ড কার্জন এর মাধ্যমে।
সমবায়ের গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানের ১৩ (খ) অনুচ্ছেদে সমবায়কে মালিকানার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সমবায়ের গুরুত্ব অনুধাবন করে দেশের প্রত্যেক ইউনিয়নে ইউনিয়নভিত্তিক বহুমুখী সমবায় সমিতির মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে সহজে এবং সুলভ মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য এবং কৃষি উপকরণ পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।
তাছাড়া, দেশের প্রায় প্রত্যেকটি গ্রামে কৃষি সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে কৃষকদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করছেন।
বর্তমান সময়ে সমবায় আন্দোলন অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষি ও ভোগ্য পণ্য উৎপাদন ও বিপণন, মৎস্য চাষ, ইক্ষু চাষ, দুগধ উৎপাদন, প্রকিয়াজতকরণ এবং বিপণন, তাঁত শিল্প, হস্তশিল্প, মৃৎশিল্প, চামড়া শিল্প, যানবাহন, আবাসন, মৌচাষ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমবায় সমিতিগুলো বিচরণ করছে। সমবায় সমিতিগুলো দেশের গন্ডি পেরিয়ে তাদের উৎপাদিত পণ্য এখন বিদেশেও রপ্তানি করছে। দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সেক্টরে সংগঠিত এ সব সমিতির সংখ্যা বর্তমানে প্রায় পৌনে দুই লক্ষ। দেশের এক কোটিরও বেশি মানুষ এ সকল সমিতির সদস্য পদ গ্রহণ করে সমবায় আন্দোলনকে জোরদার করেছে। সমবায় আন্দোলন দেশের একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
অনুষ্ঠান সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন থুকড়া নবরুপ আদর্শ বহুমুখী সমবায় সমিতির সদস্য বিপন্ন কুমার মন্ডল।
https://www.kaabait.com