• রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০২:২০
সর্বশেষ :
পাটকেলঘাটায় আনারস প্রতিকের নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন পাটকেলঘাটায় মাদ্রাসার ছাত্রীকে ধ র্ষ ন চেষ্টা মা ম লায় যুবক গ্রেফতার  ডুমুরিয়াসহ ৪৫০টি মৎস্যজীবী গ্রাম উন্নয়ন করা হচ্ছে সাতক্ষীরায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন শ্যামনগরে সুপিয় পানির জন্য হাহাকার, সরকারীভাবে বর্ষার পানি সংরক্ষণের ট্যাংক দাবি  ইউএনও’র আদেশ অমান্য করে ঘেংরাইল নদীর ব্রিজের কাজ আবারো শুরু দেবহাটা উপজেলা কৃষি অফিসারের বদলীজনীত সংবর্ধনা প্রদান দেবহাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৯ প্রার্থীর প্রতিক বরাদ্দ না.গঞ্জ সদরে মাংস প্রক্রিয়াকারীগণের প্রশিক্ষণ কর্মশালা কালিগঞ্জে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তির ক ঙ্কা ল উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ

ডুমুরিয়ার কানাইডাঙ্গা সুইস গেটের সামনে পলি পড়ে সমতল হওয়ায় পরিদর্শন করেন ইউএনও

শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া, খুলনা প্রতিনিধি  / ৩১ দেখেছেন:
পাবলিশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
ডুমুরিয়ার কানাইডাঙ্গা সুইস গেটের সামনে পলি পড়ে সমতল হওয়ায় পরিদর্শন করেন ইউএনও

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টায় ডুমুরিয়ার কানাই ডাঙ্গা সুইস গেটের সামনে পলি পড়ে সমতল হওয়ায় ও বিলের পানি সরবরাহ না করার কারণে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন পরিদর্শন করেছেন।

 

খুলনার ডুমুরিয়ার এক সময়কার খর স্রোতা শোলমারী নদী পলিতে ভরাট হয়ে প্রায় সমতল ভুমিতে পরিণত হয়েছে। নদীর দুইপার জুড়ে জেগে উঠেছে বিশাল চর। জোয়ারে ডুবে আর ভাটায় ভাসে। ভাটায় নদীর বুক দিয়ে হেটে পারাপার হয় দু’পারের মানুষ। নদী সিলটেড হওয়ায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার হুমকীতে পড়তে যাচ্ছে খুলনা নগরীসহ যশোরের ভবদহ, খুলনার ডুমুরিয়া, রংপুর, গুটুদিয়া,রঘুনাথপুর, ভান্ডারপাড়া, বটিয়াঘাটার জলমা
ইউনিয়নের বিলাঞ্চলসহ অন্তত অর্ধশত গ্রাম। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর বিলডাকাতিয়ার পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ এই নদী।

জানা যায়, খুলনা শহরের কোল দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরব ও রূপসা নদী। শহরের দক্ষিনে বটিয়াঘাটা সদরের পাশ দিয়ে কাজীবাছা নদী পশুর নদীর সঙ্গে মিশে সুন্দরবনে মিলেছে। কাজীবাছা নদী শোলমারী হয়ে সালতার সাথে মিশে ভদ্রা নদী হলে শিপসা হয়ে সুন্দরবনে মিলেছে। এক যুগ আগেও প্রায় ১’শ হাত গভিরতা ছিলো এ নদীর। বটিয়াঘাটা বাজার এলাকা থেকে বারোআড়িয়া পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত নদীর নাব্যতা একেবারই হারিয়ে গেছে। বটিয়াঘাটা, শোলমারি, শরাফপুরসহ বেশ কয়েকটা জায়গায় প্রায় সমতয় ভ‚মিতে পরিণত হয়েছে।

পলি ভরাট হয়ে শোলমারি ১০ ভেন্টের সুইজ গেট এবং রামদিয়া ৯ ভেন্টের সুইহগেট গেটের কপাট আটকে পড়েছে। গত দুই সপ্তাহ যাবত শোলমারী গেটের মুখে পলি অপসারণ কাজ করছেন এলাকার জনগণ। বিলে অনেক বোরো ক্ষেত ধুধু করছে। এবার ধান ঘরে তুলতে কৃষকের প্রায় দ্বিগুন টাকা শ্রমিকের পেছনে গুনতে হচ্ছে। নদী সিলটেড হওয়ায় ভিতরের জমি ছাড়া অন্তত ১০/১২ ফুট উঁচু হয়ে গেছে নদীর বুক। ফলে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কবলে পড়তে যাচ্ছে পাউবো’র ২৭, ২৮,ও ২৯নম্বর পোল্ডার আওতায় হাজার হাজার হেক্টর জমি।

 

এদিকে নদীর নাব্যতা ফেরাতে জোয়ার-ভাটার বিকল্প কিছুই মনে করছেন না সুধিজনেরা। এ বিষয়ে ভান্ডার পাড়া ইউ পি চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ্র দে বলেন, এই নদীটির দুই দিকে জয়েন্ট। একদিকে শিবসা আর একদিকে কাজীবাছা নদী। এ নদীর সাথে শোলমারী, সালতাসহ বড় বড় নদী ও অনেকগুলো খাল-জলাশয় ছিলো। কিন্তু নদীর মুখগুলোতে ¯সুইজ গেট করে দেয়া হয়। এরপর আস্তে আস্তে নদীর স্রোত বিমুখ হয়ে যায়। দুই দিক দিয়ে জোয়ার আসার পর থমথম হলে পলি নিচে পড়ে ভাটায় পরিস্কার পানি বের হয়। ফলে দ্রুত পলিতে ভরাট হয়ে গেছে নদীটি। নদীর নাব্যতা ফেরাতে হলে স্রোত মুখর করতে হবে।

 

সেক্ষেত্রে ¯সুইজ গেট দিয়ে পানি উঠা-নামা করা একান্ত জরুরী বলে তিনি মনে করেন।

 

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ও হাসনাত বলেন, ‘নদীটি অনেক বড়, এটি খনন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে বর্ষা মৌসুমের আগে গেটের কপাট ও মুখের পলি অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে টিআরএম বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা এডিপি প্রকল্প ছাড়া সম্ভব না। এটা হওয়া অনেক জটিলতা ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, ‘নদীটিতে দুই দিকের পানি এসে থিতে যেয়ে
দ্রুত সময়য়ের মধ্যে ভরাট হয়ে গেছে। স্রোতের ব্যবস্থা ছাড়া এ নদী বাঁচানো সম্ভব নয়। তবে যেটা হোক দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে জলাবদ্ধতার কবলে পড়বে এই অঞ্চল। শুধু ডুমুরিয়া তা কিন্তু না। জলাবদ্ধতায় পড়বে যশোরের ভবদহ ও খুলনা মহানগরের একটি অংশ। তিনি বলেছেন, সরকারের যত উন্নয়ন তা পানিতে তলিয়ে এক নিমিষেই শেষ হয়ে যাবে। তবে স্থায়ী সমাধানে কৃত্রিম স্রোত বা টিআরএম যেটাই হোক দ্রুত করতে হবে।’

 

এদিকে ভৈরব নদী ও রূপসা নদীর সাথে মিশে আছে খুলনার প্রাণ। প্রচন্ড খরস্রোতার নদী দুইটিও বর্তমানে নাব্যতা হারিয়েছে। যে কারণে শেষ ভাটায় ছাড়া শহরের পানি আর নামছে না। তবে খুলনা মহানগরের পানি নিষ্কাশনে মাস্টার প্লানে কাজ চলছে। ৮’শ কোটি টাকায় ময়ুর নদীসহ ২২টি খাল পুনঃখননের টেন্ডার কাজ চলমান রয়েছে। ‘বর্তমানে ভৈরব ও রূপসা নদীতেও পলি পড়ে ভরাট হয়েছে। শেষ ভাটায় ছাড়া শহরের পানি নামছে না। এ নদী মারা গেলে খুলনা নগরী জলাবদ্ধতায় রূপ নেবে নিশ্চিত।‌২৯পোল্ডার কানাই ডাঙ্গা সুইস গেটের খাল খনন করে পানি সরবরাহ করার জন্য ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল আমিন ভান্ডার পাড়া চেয়ারম্যান কে নির্দেশ দেন।

 

কানাই ডাঙ্গা সুইস গেট পরিদর্শন শেষে ভান্ডার পাড়া ইউনিয়ন পরিষদ পরিদর্শনসহ সকল সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের এস ও হাসনাত, ভানডপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোপাল চন্দ্র দে, ডুমুরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহতাব হোসেন, ইউ পি মেম্বার আসাদুজ্জামান মিন্টু সহ এলাকার খেটে খাওয়া মানুষ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন ।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com