• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৯:৫৩
সর্বশেষ :
সাতক্ষীরায় বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন শ্যামনগরে সুপিয় পানির জন্য হাহাকার, সরকারীভাবে বর্ষার পানি সংরক্ষণের ট্যাংক দাবি  ইউএনও’র আদেশ অমান্য করে ঘেংরাইল নদীর ব্রিজের কাজ আবারো শুরু দেবহাটা উপজেলা কৃষি অফিসারের বদলীজনীত সংবর্ধনা প্রদান দেবহাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ৯ প্রার্থীর প্রতিক বরাদ্দ না.গঞ্জ সদরে মাংস প্রক্রিয়াকারীগণের প্রশিক্ষণ কর্মশালা কালিগঞ্জে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তির ক ঙ্কা ল উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ পাইকগাছায় স্কুল ছাত্রী ধ র্ষ ণের অভিযোগে থানায় মামলা ; ধ র্ষ ক গ্রেপ্তার  তালা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ॥ প্রতীক পেয়েই প্রচার শুরু নির্মাণ শ্রমিক ফেডারেশনের ১লা মে আন্তজার্তিক মে দিবস পালিত

দেবহাটায় প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জন-জীবন 

কে এম রেজাউল করিম, দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি / ৫৩ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৪
দেবহাটায় প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জন-জীবন 

সকাল থেকেই ঠা ঠা রোদে শুরু হচ্ছে দিন। তীব্র তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাতক্ষীরার দেবহাটার মানুষের জনজীবন। প্রতিদিন একটু একটু করে বাড়ছে সূর্যের তাপ। প্রচণ্ড গরমে বেলা বাড়তেই পথে-ঘাটে কমে যাচ্ছে লোকের সংখ্যা। তাপপ্রবাহের জেরে ঘেমেনেয়ে একাকার মানুষ। কাজের সূত্রে সারা দিনের জন্য যাদের রাস্তায় থাকতে হচ্ছে, তাদের অবস্থা তো দফারফা।
দেবহাটায় সারা দিন রোদের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, মানুষজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন। দিন ভর রোদের প্রভাবে রাতেও বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ। একটুখানি বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছেন মানুষ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দিনের তাপমাত্রাও বাড়তে থাকে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যেতে চাইছে না। দুপুর ১২টার পর রাস্তাঘাট প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়ে। প্রচণ্ড গরমে শ্রমজীবী মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন বেশি। একটু স্বস্তির আশায় মানুষ ছায়া খুঁজে বেড়াচ্ছে। তেষ্টা মেটাতে কেউ ডাবের পানি পান করছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের শরবত বিক্রি হচ্ছে প্রচুর।
কিছুটা প্রশান্তির জন্য মানুষ ছুটছেন গাছের ছায়া কিংবা শীতল কোনো স্থানে। গরমের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে শিশুরা পুকুর কিংবা নদীর পানিতে সময় পার করছে। অতিরিক্ত গরমে দেবহাটার জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বাড়ছে পানিবাহিত রোগ। ডায়রিয়ার পাশাপাশি জ্বর, সর্দিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষ। হিটস্টোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন অনেকে।
বৃষ্টির দেখা না থাকায় তীব্র গরমে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ছে পুকুর, খাল, বিলের পানির তাপমাত্রা। অতিরিক্ত গরম পানির কারণে মাছের বিভিন্ন রোগের প্রকোপও দেখা দিচ্ছে। অনেক ঘেরের মাছ মরে ভেসে উঠছে। তীব্র এ গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ শেষে এবার অতি তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে সাতক্ষীরা দেবহাটায় । তাপদাহে সবজি ক্ষেতসহ সকল প্রকার চাষ ব্যাহত হওয়ার আশংকা। হাসপাতালে শিশু রোগের সংখ্যা প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সাংবাদিক সৈয়দ রেজাউল করিম বাপ্পা , বলেন তীব্র এ গরমে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ শেষে এবার অতি তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে সাতক্ষীরার দেবহাটার  জনজীবন। তীব্র গরমে বয়স্ক, শিশুরা পড়েছে সব থেকে বেশি ভোগান্তিতে। একটু স্বস্তি পেতে ঠান্ডা শরবত, পানি, আইসক্রিম খেয়ে তৃষ্ণা মেটাছে সাধারণ মানুষ।
০৩ নম্বর সখিপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন টানা তাপদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড গরমের সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষেরা অস্বস্তিতে পড়েছেন। তাপমাত্রাজনিত কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রখর রোদের ঘাম ঝরানো তাপমাত্রার কারণে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম বিপাকে। বিশেষকরে তীব্র রোদের তাপের কারণে দিনমজুর, রিকশাচালক, ঠেলা ও ভ্যানচালকরা কাজ করতে পারছেন না। ফলে তীব্র তাপদাহে অনেকে অলস সময়ও পার করতে দেখা গেছে। আবার অনেকেই জীবন-জীবিকার তাগিদে প্রচন্ড তাপদাহ উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন। তীব্র এ গরমে কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে আসা শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। অনেককে গাছ তলায় অবস্থান নিয়ে বিশ্রাম নিতে দেখে গেছে।  দেবহাটা  উপজেলায়  গাছের ছায়ায় ভ্যান চালক বিশ্রাম নেওয়া সময় পুটলু ভাই  বলেন, ‘রোদ তো না, যেন আগুনের হল্কা বের হচ্ছে। বাইরে দুই চার মিনিট থাকা যাচ্ছে না। খুব তেষ্টা পাচ্ছে। শরীর জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে।’ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীব-বৈচিত্র্যের ওপর। এমন প্রচন্ড গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে দেবহাটা  উপজেলাবাসীর । একটু শীতলতার জন্য শিশু-কিশোর সবাই পুকুর-নদী-বিলে ছোটাছুটি করছে। অসহনীয় প্রচন্ড গরমে গ্রামাঞ্চল কিংবা শহরে শিশু, বয়স্কদের জ্বর-সর্দি- ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। তাপের কারণে নানা বয়সীদের দেখা দিয়েছে চর্ম রোগও।
দেবহাটা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা অধীর  কুমার গাইন বলেন, ‘সকাল থেকে সারা দিন রোদের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, মানুষজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন। তাপমাত্রা এতো বেশি যে দুটো ফ্যান চালিয়েও শরীর জুড়নো যাচ্ছে না।’
ভ্যান চালক মনিরুল ইসলাম  বলেন, কয়েক দিন থেকে ধরে যে তাপ উঠছে ভ্যান নিয়ে পাকা রাস্তায় বের হওয়া যাচ্ছে না। চাকা পানচার হয়ে যায় গরমে। জানি না এ রকম প্রখর রোদ আর কত দিন থাকবে।
দেবহাটা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা  বলেন, ‘এই গরমে সব বয়সী মানুষের ডায়রিয়াসহ পেটের নানা ধরনের পীড়া দেখা দিতে পারে। বয়স্ক যারা তাদের হিট স্ট্রোক হতে পারে। শ্রমজীবী মানুষকে তো আটকে রাখা যাবে না। তাদের জন্যে পরামর্শ, সকাল সাড়ে দশটা ও বিকেলের দিকে যেন তারা কাজ করেন।’ বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার বিশেষ করে ডাব এর পানি খেতে হবে এবং ভাজা পোড়া খাবার পরিহারের পরামর্শ দেন তিনি।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com