নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন: নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে জেসিন্ডা আরডার্ন পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে তিনি এ ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর আবেগী কণ্ঠে জেসিন্ডা বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সাড়ে ৫ বছর কঠিন ছিল। আমিও একজন মানুষ। আমাকেও পদ থেকে সরে যাওয়া প্রয়োজন। ঘোষণাটি নিয়ে যে বিস্তর আলাপ-আলোচনা হবে, সে কথা নিজেও জানেন তিনি। এ প্রসঙ্গে জেসিন্ডা বলেন, আমি জানি, এ সিদ্ধান্তের পর অনেক আলোচনা হবে। সিদ্ধান্তের পেছনের তথাকথিত সত্যিকারের কারণ নিয়ে কথা হবে।

 

 

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই গ্রীষ্মে, আমি শুধু একটি বছরের জন্য নয়, আরও একটি মেয়াদে দায়িত্বে থাকার জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজে বের করার আশা করেছিলাম। কারণ এই বছরের জন্য এটিই প্রয়োজন। তবে আমি তা করতে পারিনি। আরডার্নের পদত্যাগের ঘোষণাকে তার চারিত্রিক বিনয়ের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের মতামত বিভাগের সম্পাদক আন্দ্রেয়া পাপুক।

 

 

তিনি বলেন, আরডার্নকে অবশ্যই স্মরণ করা হবে। তবে তার সিদ্ধান্তকে সম্মান করা উচিত। এটি রাজনীতি ও ব্যবসায় বৈচিত্র্য অর্জনের চ্যালেঞ্জগুলো প্রতিফলিত করে। শুধু নারীদের সেখানে নিয়ে যাওয়া নয়, এটি তাদের ধরে রাখারও বিষয়। আমরা চাই, আরডার্নের মতো রাজনীতিবিদরা টিকে থাকুন। কারণ তারাই পারেন পরিবর্তন আনতে। মাত্র ৩৭ বছর বয়সে বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ নারী সরকারপ্রধান হয়ে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন জেসিন্ডা আরডার্ন। ২০১৯ সালে ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে চরমপন্থির গুলিতে ৫১ জন নিহত হওয়ার পরে তিনি নিউজিল্যান্ডের বন্দুক আইন সংস্কার করেন। একই বছরের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড উপকূলে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে ২২ জন মারা যাওয়ার পর আবারও তার সহমর্মিতা দেখা গিয়েছিল।

 

 

ব্লুমবার্গের মতামত বিভাগের সম্পাদক আন্দ্রেয়া পাপুকের মতে, মহামারি আরডার্নের মেধার পরীক্ষা নিয়েছে। বিশ্বের অন্যতম কঠোর লকডাউনের সঙ্গে ভাইরাসটি মোকাবিলায় কৃতিত্বের দাবিদার তিনি। আরডার্ন যে বিরক্ত হতেন না, তা কিন্তু নয়। তবে এটি তার আরেকটি চারিত্রিক প্রমাণ যে, তিনি রাজনীতির রুক্ষতা ও গণ্ডগোলের ঊর্ধ্বে উঠে ভালো খেলোয়াড় হতে পারেন। একবার এক বিরোধী নেতাকে অপমান করে ক্ষমা চেয়েছিলেন আরডার্ন। তার সেই অপমানসূচক বক্তব্যের নথি দাতব্য অর্থ সংগ্রহের জন্য নিলামে তুললে এক লাখ নিউজিল্যান্ড ডলারে বিক্রি হয়। সেই নথিতে আরডার্নের অফিসিয়াল সই ছিল।

 

ক্ষমতাসীন নিউজিল্যান্ডের লেবার পার্টির নতুন নেতৃত্বের জন্য আগামী রোববার ভোট হবে। যিনি দলের নেতা নির্বাচিত হবেন, তিনি পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আরডার্নের মেয়াদ শেষ হবে ৭ ফেব্রুয়ারি এবং ১৪ অক্টোবর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ছবি: সংগৃহিত