• সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৫৭
সর্বশেষ :

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ সাতক্ষীরাবাসী: প্রতিকার দাবি

জিএম আমিনুল হক / ১৩ দেখেছেন:
পাবলিশ: সোমবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

সাতক্ষীরার শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দিন তো বটেই! সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গেই মশার অত্যাচার চরমে পৌঁছায়। এতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিশু, বৃদ্ধ ও গৃহপালিত পশুরাও রেহাই পাচ্ছে না। সবাই চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

 

ময়লা আবর্জনা নোংরা পরিবেশের কারণে সাতক্ষীরার সর্বত্র বিস্তর হচ্ছে মশা মাছির প্রজনন স্থান। শীত বৃদ্ধির পাশাপাশি মশার উপদ্রপ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

এ ব্যাপারে পৌরসভা থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায়ে এখনো কোন কার্যকর উদ্যোগ শুরুই হয়নি। অতিষ্ট সাতক্ষীরা বাসী অবিলম্বে ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশা নিধনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য দাবী জানিয়েছে।

 

 

জানা গেছে, ৩১.১০ বর্গ কিলোমিটারের সাতক্ষীরা পৌরসভা ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠা হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা কারণে অবহেলিত অন্তত ২লাখ পৌরবাসী। নাগরিক সেবা বঞ্চিত এই পৌরসভায় প্রায় ২শ’ কিলোমিটার কাঁচা পাকা ড্রেন রয়েছে। রয়েছে দেড় শতাধিক ডাস্টবিন, কষাইখানা ও গণশৌচাগার।

 

শহরের বুক চিরে প্রবাহিত প্রাণসায়ের খালধারও পরিণত হয়েছে মশার প্রজনন ক্ষেত্রে। ডেঙ্গু মশা, লার্ভা ও মাছির নিরাপদ এসব স্থান কখনই নিয়মিত পরিস্কার না করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।

 

অন্যান্য বছরে ফগার মেশিন ব্যবহার করে দৃশ্যমান কিছু কার্যক্রম দেখা গেলেও এবার তারও পাত্তা নেই। পৌরসভার বাসিন্দা জামশেদ আলী জানান, মশার কামড়ে রাতে ঘুমানো দিনে কাজ করা এবং ছেলে-মেয়েদের পড়ালেখা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। মশা নিধনে নিয়মিত কার্যকর পদক্ষেপ এবং মশার প্রজনন কেন্দ্র ধ্বংসের দাবী জানিয়েছেন পৌরবাসী।

 

ইতোপূর্বে মাঝেমধ্যে ফগার মেশিন ব্যবহার হলেও এখন তা দেখা মেলেনা, মেয়র, কাউন্সিলররা না থাকায় পৌরবাসী যেন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে বললেন স্থানীয়রা।

 

পলাশপোল এলাকার মুসল্লী আবু দাউদ জানান- মসজিদে নামাজ পড়ার সময় মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মুসুল্লিরা। নামাজের প্রতি মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ মসজিদে মশার উৎপাত বেশ বেড়ে গেছে। কিছুতেই যেন স্বস্তি মিলছে না। শহরবাসীর অভিযোগ, মাঝে মাঝে পৌরসভার পক্ষ থেকে মশা নিধনের জন্য স্প্রে করা হলেও তা কোনো কাজেই আসছে না।

 

অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ওষুধ সঠিক নিয়মে প্রয়োগ করা হয় না, ফলে মশার বংশবিস্তার দিন দিন বেড়েই চলছে।

 

মানবাধিকার কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, শহরের বিভিন্ন জলাবদ্ধ এলাকা ও পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলো, নালা-নর্দমায় জমে থাকা পানি ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ মশার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এসব এলাকায় নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় মশা দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারছে।

 

জেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন বলেন, শুধু স্প্রে করা যথেষ্ট নয়, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংস করায় হতে পারে এর স্থায়ী সমাধান। তাই পৌরসভাকে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। আধুনিক পদ্ধতিতে মশা নিধনের জন্য নতুন কৌশল ও কার্যকর ওষুধ ব্যবহার করা জরুরি। জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিতে সাতক্ষীরাবাসী পৌর কর্তৃপক্ষসহ জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।


এই বিভাগের আরো খবর

https://www.kaabait.com