• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০২:০৭
সর্বশেষ :
অত্যাধুনিক সেবা দিতে রোস্তম মেডিকেল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের উদ্বোধন তালায় দোয়াত-কলমের জনসভায় জনস্রোত তালায় ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নি হ ত, আ হ ত ১১ এলজিইডির উন্নয়নে পাল্টে যাচ্ছে ডুমুরিয়ার গ্রামীণ অর্থনীতি পাইকগাছায় গাছ কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে যুবকের মৃ ত্যু পাইকগাছায় ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ মোট ১৯ প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে বিনেরপোতা এলাকায় মোটরযানের উপর মোবাইল কোর্ট   আশাশুনিতে সংগঠন পরিপন্থী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন  শ্যামনগরে রোগীদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ করেছেন এমপি দোলন  দেবহাটায় এনসিসি ব্যাংকের ৩১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন 

ডুমুরিয়ায় পাট বীজ উৎপাদন, চাষ ও পচনের আধুনিক প্রদ্ধতির ক্রমোন্নয়ন বিষয়ক কর্মশালা

শেখ মাহতাব হোসেন, ডুমুরিয়া, খুলনা প্রতিনিধি  / ৪৪ দেখেছেন:
পাবলিশ: রবিবার, ৫ মে, ২০২৪
পাট বীজ উৎপাদন, চাষ ও পচনের আধুনিক বিষয়ক কর্মশালা

রবিবার ৫ মে ২০২৪ সকাল সাড়ে ১০টায় খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা শহীদ জোবায়েদ আলী মিলনায়তনে বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বপিসি) বানিজ্য মন্ত্রনালয় বাংলাদেশ জুট এসসোসিয়েশন (বি জে এ) আয়োজনে পাটের উপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় । আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বি জেএর চেয়ারম্যান মোঃ ফরহাদ আহমেদ আকন্দ ।

 

অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন সহকারী পরিচালক পাট অধিদপ্তর খুলনার মোঃ নজরুল ইসলাম খান, ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন, খুলনা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা বাসুদেব পাল, পাট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র হিসাব রক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম, খুলনার (বি জে এর) আবুল কালাম আজাদ, পাট উন্নয়নের সহকারী সচিব দেব ভট্টাচার্য, ডুমুরিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ
সম্পাদক শেখ মাহতাব হোসেন ও ডুমুরিয়া উপজেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা নিলয় মল্লিক প্রমুখ ।

বক্তরা বলেন দেশী ও তোষা উভয় জাতের গাছের শতকরা ৭০-৮০ ভাগ ফল কালচে বাদামী রং ধারণ করলে গাছের গোড়া সমেত কেটে ফসল সংগ্রহ করতে হবে। পাটের জমি নিয়মিত পরিদশর্ন করে পাতায় ডিমের গাদা/দলবদ্ধ কীড়া বা পোকা সমেত পাতাটি তুলে পায়ে মাড়িয়ে, মাটি চাপা দিয়ে বা কেরোসিন মিশ্রিত পানিতে ডুবিয়ে মারা যায় পাট গাছের উচ্চতা ১ মিটারের কম হলে প্রতিগাছে ২টি আর বেশী হলে ৪টি বিছাপোকা দেখা গেলে কীটনামক ছিটানো যাবে।

 

ডায়াজিনন ৬০ইসি/ নুভাক্রন ৪০ ইসি প্রতি লি. পানিতে ১.৫ এমএল অথবা রিপকার্ড ১০ইসি/ সিমবুশ ১০ইসি প্রতি লি. পানিতে ০.৫ এমএল ব্যবহার করে এ পোকা দমন করা যায়। স্বল্প পানিতে পাট পচন ব্যবস্থাপনা পাটের ছাল করন এবং হাল পচন পদ্ধতিঃ বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে ভালো পাট জন্মে, কিন্তু পাট পচনের প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত পানির অভাবে ঐ সমস্ত এলাকায় উৎপাদিত পাট আঁশের অধিকাংশই অত্যন্ত নিম্নমানের। যে সমস্ত এলাকায় প্রচুর পাট উৎপন্ন হয়, অথচ প্রয়োজনীয় পচন পানির অভাবে চাষী ভাইয়েরা পাট সঠিকভাবে পচাতে পারছেন না, সে সব এলাকার পাট পচন সমস্যার সমাধানকল্পে দীর্ঘদিন গবেষণার পর বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে সংশ্লিষ্ট এলাকার চাষী ভাইদের জন্য বাঁশের হকের সাহায্যে পাটের ছালকরণ (রিবনিং) ও ছাল পচন (রিবন রেটিং) পদ্ধতি উদ্ভাবন করা হয়েছে।

পাট গাছ না পচিয়ে কাঁচা গাছ হতে ছাল ছাড়িয়ে নিয়ে ছাল পচাতে হয়, ফলে পচানোর জন্য পানি কম লাগে, পচনের জায়গা ও সময় কম লাগে, বহন খরচ কম লাগে, আঁশে কোন কাটিংস থাকে না এবং আঁশের মান অত্যন্ত ভালো হয়, ফলে আঁশের মূল্য বেশী পাওয়া যায়। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে রোগাক্রান্ত গাছ থেকে কোন অবস্থাতেই বীজ সংগ্রহ করা না হয়। রোদ্রজ্জল দিনে বীজ সংগ্রহ করা উত্তম, রফতানিযোগ্য পাট পণ্যের উৎপাদনে সবাইকে মনোযোগী হওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন পণ্য আবিস্কার ও নতুন বাজার তৈরির দায়িত্ব আপনাদের। পাট পণ্যকে বহুমুখীকরণ এবং এ থেকে আর কি কি তৈরি করা যায় সে বিষয়ে মনোযোগী হওয়া দরকার।

 

২০০২ সালে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। জেডিপিসির মাধ্যমে এরই মধ্যে প্রায় ৬৫০ জন বেসরকারি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হয়েছে। এ উদ্যোক্তারা প্রায় ২৮২ ধরনের পাটের তৈরি পণ্য বাজারজাত এবং রফতানি করছে। বর্তমানে কাঁচাপাট রফতানিতে প্রতি টনে সম্ভাব্য আয় হয় ৭০০-৮০০ ইউএস ডলার, ট্রাডিশনাল পাটের সুতা রফতানি করে প্রতি টনে সম্ভাব্য আয় ১০০০-১২৫০ ইউএস ডলার, পাটপণ্য রফতানি করে প্রতি টনে সম্ভাব্য ২০০০-৩০০০ ইউএস ডলার আর ভ্যালু অ্যাডেড বহুমুখী পাটপণ্য রফতানি করে প্রতি টনে সম্ভাব্য ৮০০০- ১২০০০ ইউএস ডলার আয় করা সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পাটের সুতা, বস্তা, চট, কার্পেট পণ্যের পাশপাশি পাট দিয়ে পর্দার কাপড়, কুশন কভার, কার্পেট, শাড়ি তৈরি হয়। গরম কাপড় তৈরির জন্য উলের সঙ্গে মিশ্রণ করা যায়। পাটখড়ি থেকে উন্নতমানের কার্বন তৈরি হচ্ছে। পাটের আঁশ থেকে প্রসাধনী, ওষুধ, রং তৈরি সম্ভব। বাঁশ এবং কাঠের বিকল্প হিসেবে পার্টিকেল বোর্ড, কাগজের মণ্ড ও কাগজ তৈরিতেও পাটখড়ি ব্যবহৃত হয়।

 

সম্প্রতি পাট থেকে জুট পলিমার তৈরির পদ্ধতি আবিস্কৃত হয়েছে, যা দিয়ে পলিথিন ব্যাগের বিকল্প ‘সোনালি ব্যাগ’ তৈরি করা হচ্ছে। তিনি সোনালি ব্যাগের ব্যবহার দ্রুত প্রসারের উদ্যোগ গ্রহণেরও আহবান জানান। শিল্পখাত বিবেচনায় পাটশিল্প এখনো বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প। প্রতি বছর কাঁচাপাট, প্রচলিত পাটপণ্য এবং বহুমুখী পাটজাত পণ্য বিদেশে রফতানির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হচ্ছে। এ দেশের পাট বিশ্বের অন্যতম নামকরা শিল্প কারখানা বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ বেঞ্জ, টয়োটা, রেনল্ট, ভলভো, অডি, ডেইমলার এ ব্যবহৃত হচ্ছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে ৯১২ মিলিয়ন ইউএস ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে।

পাটের সম্ভাবনাকে যদি আমরা সম্পূর্ণ কাজে লাগাতে পারি, তবে আমাদের রফতানি আয় অনেক বেড়ে যাবে। পাট সম্পর্কে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত করেন। ডুমুরিয়া উপজেলার ৫০জন পাট চাষীদের দিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেন ।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com