• মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:২৫
সর্বশেষ :
শ্যামনগরে কপ৩০ পূর্ববর্তী আঞ্চলিক সংলাপ অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু পদক্ষেপে নতুন প্রত্যাশা কে’য়া’ম’তের দিন মানুষ নিজের তিন পাশে যা দেখতে পাবে তালার মাগুরা ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত ডুমুরিয়ায় পূবালী ব্যাংকের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন আশাশুনিতে দৈনিক সাতক্ষীরার সকালের ৩য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন জুলাই সনদের ভিত্তিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে : মিয়া গোলাম পরওয়ার শিক্ষকদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিলেন হাবিবুল ইসলাম হাবিব ফয়জুল্যাপুর ফ্রেন্ডস ক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন ধানদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন শাসক হতে চাই না জনগণের সেবক হতে চাই : অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহ

তালায় ৩৩ বিঘা জলমহাল বেদখল, ৪০ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি / ১৪১ দেখেছেন:
পাবলিশ: বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
তালায় ৩৩ বিঘা জলমহাল বেদখল

সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের হরিহরনগর মৌজার ৩৩ বিঘা জলমহাল প্রায় সাত বছর ধরে বেদখল হয়ে আছে। এই সময়ে এই জলমহাল থেকে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হয়েছে সরকার । দয়ানি-সরিগাতি খাল জলমহাল যার দাগ নং-৯৪৪৮ ও ৯৪৮১ এবং জমির পরিমাণ যথাক্রমে প্রায় ৩ একর ৯৪ শতাংশ ও ৭ একর ২ শতাংশ।

জানা গেছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দীর্ঘকাল যাবত জলমহালটি খাস খাল হিসাবে ভাল মূল্যে স্থানীয় মৎস্য চাষীদের কাছে ইজারা দিয়ে আসছে। কিন্তু ২০১৭ সালে রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে কতিপয়  প্রভাবশালী লোক জাল দলিল ও কাগজপত্র নিয়ে হাজির হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও জনসাধারণকে বোকা বানিয়ে বৈধ ইজারাদের হটিয়ে  তারা উক্ত জলমহাল দখল করে নেয়। পরে এই প্রভাবশালী চক্র ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে জলমহালটি খÐ খÐ করে লিজ (হারি) দিয়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা আদায় করে।

বিষয়টি নিয়ে খেশরা ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের মোঃ মতলেব সরদার জানান, সরকার সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা দায়ের করে, যার নং-৬৯/২০১৭। দীর্ঘ শুনানি ও যাচাই-বাছাইয়ের পর কোট দলিলটি জাল হিসাবে ঘোষণা করে এবং সেটি জব্দ করে। একই সাথে আদালত জলমহালটি খাস খতিয়ান ভুক্ত করারসহ এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সহকারি কমিশনারকে (ভুমি) নির্দেশ দেয়। কিন্তু জাল দলিলকারী চক্র বিষয়টি সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে আপীল করে।  তবে উক্ত আদালতও নিন্ম আদালতের রায় বহাল রাখে।

দখলকারীরা সময় ক্ষেপণের অংশ হিসাবে হাইকোর্টে লিভ টু আপীল করে যার নং-২১০৯/২২ এবং কয়েকবার শুনানির তারিখ পেছানোর আবেদন করে। তবে এক পর্যায় উক্ত আপীলের শুনানি হলে, তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের রায় অনুসরণের নির্দেশ দেয় (অর্ডার নং-৫৫১ অফ ২০২২)।

এসব কিছুর পরও রবিউল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে এখনও এই জলমহাল দখল অব্যাহত রেখেছে। এদিকে বহিরাগতদের ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের খালটি দীর্ঘদিন দখলে থাকার কারণে স্থানীয় কৃষকরা ফুঁসে উঠেছে।

জানা গেছে,  এই জাল দলিলের মালিক রবিউল ইসলাম সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা এবং নিজকে আওয়ামী লীগের নেতা হিসাবে পরিচয় দিতেন।

কৃষক  আব্দুল ছালাম  বলেন, পূর্বে কৃষি জমির পানি নিষ্কাশন ও সেচ সুবিধা দেওয়ার শর্তে সরকার মৎস্য চাষিদের ইজারা দিত। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে এই দখলকারীরা তাদের নিজেদের সম্পত্তি দাবি করে এই খাল ব্যবহার করতে কৃষকদের বাঁধা দিয়ে আসছে। ফলে আশপাশের কয়েক শত বিঘা জমি অকেজো হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া বহিরাগতদের আনাগোনার কারণে স্থানীয় কৃষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা স্থানীয় প্রশাসন ও সবমহলের সহযোগিতা কামনা করেছে।

রবিউল ইসলাম, জিয়াউরসহ অনেকে জানান, খাল বা নদী কারোর ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে পারে না এবং আমরা ছোট বেলা থেকে এই জলমহাল খাস হিসাবে জেনে এসেছি । হঠাৎ দলিল আর কাগজপত্র বের হয়েছে, বিষয়টি জেনে আমরা অবাক হয়েছি। নদী-খালখোর হাত থেকে জলমহলটি উদ্ধারের পাশাপাশি অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানান তারা। তারা আরও জানান, সরকার শুধু রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে তাই নয়, দখলবাজরা যাচ্ছেতাই ভাবে জলমহালটি ব্যবহার করছে, বিশেষ করে ঘনঘন বাঁধ দেওয়ার কারণে স্থানীয় পরিবেশ ও কৃষক সমাজ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

এদিকে জলমহাল ভোগ দখলকারী রবিউল ইসলামের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জমি নিয়ে আমার সরকারের সাথে ঝামেলা থাকতে পারে, স্থানীয়দের সাথে নয়। স্থানীয় কোন ব্যক্তির কোন বক্তব্য থাকলে তারা জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এছাড়া মামলা বিচারাধীন আছে। আমি যদি রায় না পায় তাহলে কোনদিন জলমহাল যাব না।


এই বিভাগের আরো খবর

https://www.kaabait.com